পিএসজি-মার্শেই ক্লাসিকো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার (১৩ সেপ্টেস্বর) রাতে পার্ক দেস প্রিন্সেসে। ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের পুরো ম্যাচেই দুদলের খেলোয়াড়দের মাঝে দ্বন্দ্ব লেগে ছিল। মারামারি ও তর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেছেন দুই দলের পাঁচ খেলোয়াড়। যেখানে রয়েছে নেইমারেরও নাম।
পুরো ম্যাচে ১২ হলুদ কার্ড ও ৫ লাল কার্ডের মধ্যে দুই হলুদ ও এক লাল কার্ড গেছে নেইমারের নামের পাশে। কিন্তু দ্বিতীয় হলুদ তথা লাল কার্ডের পেছনে তার দায় ছিল সামান্যই। কেননা প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার আলভারো গনসালেসের বর্ণবাদী গালির প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।
এদিন মার্সেইর প্রাচীরের সামনে বারবার হতাশ হতে হয়েছে স্বাগতিকদের। মার্সেই গোলরক্ষক স্টিভ মাঁদাঁদা বেশ কয়েকটি নিশ্চিত সুযোগ সেভ করেছেন। ৩১তম মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান থাভিন। আর এই গোলেই পিএজির হার নিশ্চিত হয়ে যায়।
খেলার অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে দু’দলের মাঝে ঝামেলা বেধে যায়। একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কিতে জড়ায় দুই দলের ফুটবলাররা। এমনকি একজন আরেকজনকে লাথিও মারতে দেখা যায়। এই ঘটনায় রেফারি লাল কার্ড দেখান পিএসজির নেইমার, লেভিন কুরজাওয়া ও লিয়ান্দ্রো দানিয়েল পারেদেস এবং মার্সেইয়ের জর্ডান আমাভি ও দারিও বেনেদেত্তোকে। এছাড়া পুরো ম্যাচে মোট লাল-হলুদ মিলিয়ে ১৭টি কার্ড দেখানো হয়।
পিএসজির হয়ে শেষ খেলোয়াড় হিসেবে লাল কার্ড দেখেন নেইমার। তিনি প্রতিপক্ষের আলভারো গনসালেসের মাথার পেছনে হাত দিয়ে আঘাত করেন। রেফারি ভিএআর দেখে নিশ্চিত হন। যদিও দু’জনকে এর আগে বিতর্কে জড়াতে দেখা যায়।
পরে গনসালেসের বিরুদ্ধে বর্ণবাদে অভিযোগ তোলেন নেইমার। এক টুইটে নেইমার জানান, সে বর্ণবাদী, তাই আমি তাকে আঘাত করেছি। তবে আমার একটাই আফসোস, আমি তার মুখে আঘাত করতে পারিনি।
আরেক টুইটে নেইমার পরিষ্কার করে জানান, আমার আক্রমণটা ভিএআর সহজেই দেখিয়ে দিলো। এখন আমি দেখতে চাই যে আমাকে বাঁদর বলে গালি দিয়েছে তার চেহারাটা। এটাই আমি দেখতে চাই। আমি রেইনবো ফ্লিক করলে আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়, আঘাত করার জন্য আমাকে লাল কার্ড দেখতে হয়। তাদের কি হবে? তারপর কি?
তবে তাৎক্ষণিকভাবে নেইমারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলভারো গনসালেস। নিজের প্রোফাইলে এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ফুটবলে বর্ণবাদের কোনো সুযোগ নেই। সব ধরনের সতীর্থদের সঙ্গে খেলেই দাগহীন এক ক্যারিয়ার আমার। কখনো কখনো আপনাকে পরাজয় মেনে নেয়া শিখতে হয়। আজকের তিন পয়েন্ট দারুণ ছিল।
আলভারো গনসালেস আবার পাশে পেয়েছেন দলের কোচ আন্দ্রে ভিয়াস বোয়াসকেও। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, আমি জানি না, আমি আশা করি এমন কিছু হয়নি। ফুটবলের বর্ণবাদের জায়গা নেই। এমনটা হয়ে থাকলে সত্যিই বড় অপরাধ। কিন্তু আমি মনে করি না এমন কিছু হয়েছে। ম্যাচ শেষে পরিস্থিতির কারণে হয়তো রেগে ছিল নেইমার।
উল্লেখ্য, ফুটবল মাঠে নেইমারের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণ এবারই প্রথম নয়। এ নিয়ে অন্তত সাতবার তার সঙ্গে ঘটল বর্ণ বিদ্বেষের ঘটনা। ২০১১ সালে স্কটল্যান্ডে, ২০১২ সালে বলিভিয়ায়, ২০১৩ সালে ইটুয়ানোতে, ২০১৪ সালে বার্সেলোনায়, ২০১৪ ও ২০১৬ সালে এসপানিওলে এবং সবশেষ পিএসজিতে নিজের ঘরের মাঠেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হলেন তিনি।