চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত সমস্যা মেটার কোনো সম্ভাবনাই এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। অন্তত রাজ্যসভায় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বিবৃতি থেকে সেরকমই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় রাজনাথ সিং বলেন, অরুণাচল প্রদেশের প্রায় ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের বলে দাবি করেছে চীন।
তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে অন্তত ৩৮ হাজার বর্গ কিমি এলাকা বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে চীন। পাশাপাশি ১৯৬৩ সালের সিনো-পাকিস্তান বাউন্ডারি অ্যাগ্রিমেন্ট অনুযায়ী পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরের ৫ হাজার ১৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চীনকে দিয়েছে পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় লাদাখে চীন-ভারত উত্তেজনা প্রসঙ্গে রাজনাথ সিং বলেন, বিশ্বের কোনো শক্তি লাদাখে ভারতীয় সেনার টহলদারি আটকাতে পারবে না।
ভারতীয় সেনার টহলদারি আটকানোর জন্য চীনা বাহিনীর চেষ্টাই লাদাখে সংঘাতের কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনীর টহলদারির ধরণও বিন্দুমাত্র পরিবর্তিত হবে না বলে এদিন বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
চীন মুখে যা বলে এবং কাজে যা করে তার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেন রাজনাথ সিং। চীনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত বলে এদিন সরকারকে সতর্ক করে দেন রাজ্যসভার অনেক সদস্যই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে সবাই আছেন বলে জানিয়ে দেন রাজ্যসভার সদস্যরা। সীমান্ত সুরক্ষাকে আরো মজবুত করতে ভারত গত কয়েক বছরে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে বলে জানান রাজনাথ সিং।
তিনি আরো বলেন, গালওয়ানের সংঘাতের পর লাদাখে গিয়ে সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলে প্রধানমন্ত্রী এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, গোটা দেশ তাদের পাশে আছে। মস্কোর বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীনা বাহিনীর আগ্রাসন নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছেন রাজনাথ সিং।
এর আগেরদিনও সংসদে লাদাখ প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, লাদাখের ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করে রয়েছে চীন। ১৯৬৩ সালের চীন-পাকিস্তান সীমান্ত চুক্তিতে পাকিস্তান বেআইনিভাবে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরের ৫ হাজার ১৮০ বর্গকিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড চীনের হাতে তুলে দিয়েছে। তারপরও অরুণাচল প্রদেশে ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাকে নিজের বলে দাবি করছে বেইজিং!