প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা যখন কোনো কাজ করবেন, তখন তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করবেন। কে কী বললো বা কে কী লিখলো সেদিকে কান দেবেন না। এসব দিকে কান দিলে কোনো কাজই করতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ‘অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স অ্যাগ্রিমেন্ট (এপিএ)-২০২০’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
সরকারপ্রধান বলেন, দেশে কিছু মানুষের স্বভাবই হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা। প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের জনগণের পাশে থাকারও নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সামান্য ভুল হলেই অনেক কিছু বলেন (পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনা করেন)। কিন্তু তারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজেরা কিছুই করেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারই অনেক টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে। আর এই সব চ্যানেলে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, কিন্তু আপনাদেরকে (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঠিক কাজটি করে যেতে হবে। যদি আপনাদের এই আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনারা যা করলেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য এবং জনগণ এর সুফল ভোগ করবে, তবে আমি বলতে চাই যে আপনারা তাই করুন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের পাশে থাকা প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছি বলে তাদের পাশে থাকা আমাদেরও দায়িত্ব। আমরা জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। আর যারা সরকারি চাকরি করেন তারাও জনগণের সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলার শপথ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নিজস্ব উদ্যোগেই ‘শুদ্ধাচার’ ও এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা দেশে একটি ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই এবং আপনাদেরকেই এই শুদ্ধাচারের পরিকল্পনা করতে হবে এবং কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায় সেই উপায় বের করতে হবে। এই পরিকল্পনা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছাতে ও তা সফলভাবে কার্যকর করতে হবে। আর যারাই এটা করতে পারবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
করোনাভাইরাস মহামারি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কোভিড-১৯ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরো বলেন, এটা মাথায় রাখতে হবে যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা কাজ না করে বসে থাকেননি, তারা নিরলসভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করেছেন।
তিনি বলেন, অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের পাশাপাশি, প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে জনগণকে সাহায্য করেছেন।