কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কুয়েতের সরকারি সংবাদমাধ্যম কুয়েত টিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে শারীরিক জটিলতার কারণে চিকিৎসা নিতে ফের যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমান শেখ সাবাহ। তার অবর্তমানে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের ভার পান তার বৈমাত্রেয় ভাই যুবরাজ শেখ নাওফ আল-আহমদ আল-সাবাহ।
আঞ্চলিক বিরোধের মূল মধ্যস্থতাকারী, মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরেও একজন শীর্ষস্থানীয় সমাজসেবক হিসাবে পরিচিতি ছিলেন শেখ আল সাবাহ। সৎ ভাই শেখ জাবের আল-সাবাহের মৃত্যুর পরে ২০০৬ সালে কুয়েতের আমির হিসেবে অভিষিক্ত হন তিনি। বেশ অনেকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন কুয়েতের প্রবীণ এ আমির।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত মিত্র কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল সাবাহকে বিশেষ সামরিক সম্মাননায় ভূষিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। অসুস্থতার কারণে আমির অসুস্থ থাকায় সেটি গ্রহণ করেন তার ছেলে শেখ নাসের সাবাহ আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ।
এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, আব্রাহাম একর্ডসের অধীনে ইসরাইলের সঙ্গে পরবর্তী আরব দেশ হিসেবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে কুয়েত। কিন্তু আমিরের এ মৃত্যুতে চুক্তি হয়ত আপাতত পিছিয়ে যাবে।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক ৪০ বছরের অভিজ্ঞতার সাথে শেখ সাবাহ দ্রুত কয়েকটি আঞ্চলিক বিবাদে কুয়েতকে মূল মধ্যস্থতাকারী হিসাবে স্থাপন করেছিলেন।
১৯২৯ সালের ১ জুন কুয়েতে জন্মগ্রহণ করা শেখ সাবাহ ছিলেন শেখ আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহের চতুর্থ পুত্র। আল-মুবারাকিয়া স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পরে তিনি টিউটরের অধীনে পড়াশোনা শেষ করেন। ক্ষমতায় আসার আগে শেখ সাবাহ ১৯৯৩ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৯২ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
কুয়েতের প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডগলাস সিলিমনের মতে, ইরাক যখন কুয়েত আক্রমণ করে তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে আমির শেখ সাবাহ আমেরিকানদের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কুয়েতের চেহারা হয়ে উঠে ছিলেন।