বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার রাসেলের বিষয়ে রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দিন ধার্য করেন। সেদিন ভার্চুয়াল আদালতে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়িতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাইভেটকার চালক রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার পর গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসটি এবং তার চালককে পুলিশ আটক করে। রাসেল জানায়, বাসটি তার গাড়িকে ধাক্কা দিলে প্রতিবাদ জানাতে বাস থামাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস চালক তার ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে রাসেলের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ির বাসিন্দা রাসেল রাজধানীর আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ে বাস করতেন এবং স্থানীয় একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেট কার চালাতেন। রাসেলের পা হারানোর ঘটনার পর গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণ এবং রুলসহ আদেশ দেন।
পরবর্তীতে গত বছরের ১২ মার্চ পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে অন্তরবর্তীকালীন আদেশ দেন এই হাইকোর্ট বেঞ্চ। সেই সাথে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে রাসেলের চিকিৎসার জন্য যা খরচ তা দিতে বলা হয়। গত বছরের ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারের হাতে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেয় গ্রিন লাইন বাস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রাসেলের চিকিৎসা বাবদ আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা দেয়া হয়েছে বলে ওই দিন আদালতকে জানান গ্রিন লাইনের আইনজীবী।
এরপর হাইকোর্ট রাসেলকে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের বাকি ৪৫ লাখ টাকা কিস্তিতে দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু গ্রিন লাইনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
তবে গ্রিনলাইনের পক্ষ থেকে রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা দেয়া হয়েছে তা এই স্থগিতাদেশের মধ্যে পড়বে না বলে জানিয়ে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর হাইকোর্টে রাসেলের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়।