লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করেছেন শফিক নামে এক শিক্ষক। এ ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগটি প্রায় এক মাস পরে নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। তবে নতিভুক্তের এক মাস পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।
এদিকে এ ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শুধুমাত্র সেই শিক্ষকে শোকজ করে দায় সেরেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
গত ২৫ আগস্ট হাতীবান্ধা থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেন। এর আগে গত ২৯ জুলাই হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাসেম। তবে মামলাটি নথিভুক্ত হওয়ার খবর গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) জানাজানি হয়।
অভিযুক্ত শফিক উপজেলার দক্ষিন জাওরানী গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের বারেক মুন্সির পুত্র। এছাড়া সে কাদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা গেছে, অভিযুক্ত শফিক তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের প্রতীকী লোগো সম্বলিত ছবি পায়ের জুতায় দিয়ে পোষ্ট করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ জুলাই হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় বসিন্দা আবুল কাসেম। থানায় অভিযোগের পর থেকে বিভিন্নভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময় আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক। এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তা প্রশাসনের নজরে পড়লে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত ২৫ আগস্ট অভিযোগটি নথিভুক্ত করেন পুলিশ। এমনকি নতিভুক্তের এক মাস পেরিয়েও ধরাছোঁয়ার বাইরে ওই শিক্ষক।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালীন সময় কোন শিক্ষক নিজ এলাকার বাইরে অবস্থান করতে পারবে না। তবে ওই শিক্ষক শফিক নিয়ম নীতির তোয়াক্তা না করে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন।
তবে এ ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শুধুমাত্র সেই শিক্ষকে শোকজ করে দায় সেরেছেন। কিন্তু তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আর এতে করে উপজেলা শহর জুড়ে চলছে আলোচনা সমোলচনা। সর্বস্তরের মানুষজন অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকের আইন অনুযায়ী কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আবুল কাসেম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করেছেন শফিক। তাই আমি থানায় অভিযাগ করেছি। অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। এমনকি ২ লাখ টাকার বিনিময় মিমাংসার প্রস্তাব দেয়া হয় আমাকে। তবে আমি রাজি হই নাই। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দল জব্বার বলেন, যে এই কাজটি করছেন তার কঠিনতম শস্তি দিতে হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা (টিও) নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হবে।
এদিকে শিক্ষক শফিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি নতিভুক্ত করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম।