টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
ঝিনাইদহের সেই প্রতিবন্ধী নারীর দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী, পুরস্কৃত আশ্রয়দাতা চাষি

ঝিনাইদহের সেই প্রতিবন্ধী নারীর দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী, পুরস্কৃত আশ্রয়দাতা চাষি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা পেলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মানসিক প্রতিবন্ধী, তার সদ্যজাত কন্যাশিশু ও আশ্রয়দাতা চাষি আমজাদ আলী।

বুধবার (৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, নিজে গরিব হওয়া সত্ত্বেও চাষি আমজাদ আলী শারীরিকভাবে অসুস্থ গর্ভবতী এক প্রতিবন্ধী নারীকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেন।

ঘটনাটি জানতে পেরে মানবিক চাষি আমজাদ আলীকে পুরস্কৃত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিলেন ওই প্রতিবন্ধী নারীর।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে বলা হয়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাবাজারের ২২/২৩ বছরের জনৈক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর শারীরিক অসুস্থতা এবং তার গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে মানবিক কারণে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান মায়াধরপুর গ্রামের প্রান্তিক চাষি আমজাদ আলী। আমজাদ নিজেই গরিব মানুষ। তার কোনো চাষযোগ্য জমি নেই। সারাবছর পরের খেতে কামলার কাজ করে সংসার চালান। আমজাদ আলীর দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু সে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ৬ মাস ধরে শয্যাশায়ী। ফলে এখন শুধু আমজাদের একার রোজগারে সংসার চালাতে হচ্ছে। নিজের অভাবের মধ্যেও তিনি অনন্য মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদপত্রের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গর্ভবতী প্রতিবন্ধী নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ অক্টোবর দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে এ নারী একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। মা ও মেয়ে উভয়েই সুস্থ আছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে- আমজাদ আলীর ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে একটি মটর চালিত রিকশাভ্যান দেয়া হয়েছে।

প্রতিবন্ধী নারীটিকে করে দেয়া হয়েছে ‘প্রতিবন্ধী কার্ড’। এছাড়া প্রতিবন্ধী ওই নারী এবং তার সদ্যপ্রসূত শিশু কন্যার দেখভালের জন্য নগদ ৫৫ হাজার টাকাও আমজাদকে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আনুমানিক ২২ থেকে ২৩ বছর বয়সী পরিচয়হীন মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলাবাজারে ঘোরাফেরা করতেন। কখনো ময়লা কাপড় শরীরে জড়িয়ে আবার কখনো অর্ধনগ্ন অবস্থায় থেকে মুখে বিড় বিড় করে কী যেন বলতেন। কেউ কিছু বললে কখনো তেড়ে আসতেন। আবার কখনো ঠান্ডা মেজাজে থাকতেন। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে মায়ধরপুর গ্রামের রাস্তার পাশে অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিলেন ওই তরুণী। কেউ যখন তার পাশে আসেনি, তখন এলাকার দিনমুজুর আমজাদ আলী তাকে নিয়ে বাড়িতে আশ্রয় দেন। পরে তিনি ও তার গ্রামের আব্দুর রশিদসহ বেশ কয়েকজন মিলে তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগী দেখেই বলেন, মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। এখন তার পর্যাপ্ত খাওয়া-দাওয়া আর বিশ্রামের প্রয়োজন। হাসপাতাল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান দিনমুজুর আমজাদ হোসেন। নিজের সংসারের অন্যান্য সদস্যের মতো করে তার সেবাযত্ন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার (২ অক্টোবর) সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী ওই তরুণীর প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে আশ্রয় দেয়া উপজেলার মায়ধরপুর গ্রামের দিনমজুর আমজাদ আলী-ছাকিরন নেছা দম্পতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে ফুটফুটে কন্যাসন্তান প্রসব করেন মানসিক প্রতিবন্ধী। প্রসবের পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশ্ন ওঠে এই সন্তানের বাবা কে? কী হবে তার বংশপরিচয়? কে নেবে তার দায়ভার? ঠিক সে সময় রাতে হাসপাতালে ছুটে যান ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ। অজ্ঞাত ওই তরুণীর নবজাতককে কোলে তুলে নেন তিনি। এ সময় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহাও উপস্থিত ছিলেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আফসানা পারভীন জানান, সন্তান প্রসবের সময় তিনি স্বাভাবিক না থাকায় অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়েছে। তবে মা ও নবজাতক দুজনই সুস্থ আছেন।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital