পেসার তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে লিগ পর্বের ষষ্ঠ ও শেষ ম্যাচে নাজমুল একাদশের কাছে বৃষ্টি আইনে ৭ রানে হারলো তামিম একাদশ। ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলো তামিম একাদশ। বৃথা গেল তামিম একাদশের পেসার মোহাম্মদ সাইফুউদ্দিনের বিধ্বংসী বোলিং। ২৬ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
এই হারে ৪ ম্যাচে মাত্র ১টি জয়ে ২ পয়েন্ট তামিম একাদশের। তাই লিগ পর্ব থেকে বিদায় ঘটলো তাদের। আর ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগের সেরা দল হয়ে ফাইনালে নাজমুল একাদশ। ৪ খেলা ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে ফাইনালে নাজমুল একাদশের প্রতিপক্ষ মাহমুদউল্লাহ একাদশ।
বৃষ্টির কারণে প্রায় দুই ঘন্টা পর মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচটি ৪১ ওভারে নামিয়ে আনা হয় হয়। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নাজমুল একাদশ। তবে দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ২৫ রানে ৩ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে বিদায় নেন। দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ১০ ও সৌম্য সরকার ৭ রান করে ফিরেন। আর ৫ রান করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনটি উইকেট নিয়েছেন শেখ মাহাদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
শুরুর ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলে মিডল-অর্ডারে দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। চতুর্থ উইকেটে ৯০ রানের জুটি গড়েন তারা। দলীয় ১১৫ রানে এই জুটি ভাঙ্গেন সাইফুদ্দিন। ৭৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫১ রান করেন মুশফিক। ২৯তম ওভারে মুশফিকের বিদায়ের পর থামেন আফিফও। ৬১ বলে ৪টি চারে ৪০ রান করে মাহাদির দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ।
মুশফিক-আফিফ ফিরে যাবার পর নাজমুল একাদশের পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের বড় স্কোর গড়ার সুযোগ দেননি সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজ। সাইফুদ্দিন আরও ৩ ও ফিজ ২ উইকেট নিয়ে নাজমুল একাদশকে ১৬৫ রানেই অলআউট করে দেন।
৮ দশমিক ৩ ওভারে ২৬ রানে ৫ উইকেট নেন সাইফুদ্দিন। ৩৬ রানে ৩ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। ৩৪ রানে ২ উইকেট নেন মাহাদি।
নাজমুল একাদশ ১৬৫ রানে গুটিয়ে গেলেও বৃষ্টি আইনে ম্যাচ জয়ের জন্য ১৬৪ রানের টার্গেট পেয়েছে তামিম একাদশ। জয়ের জন্য ১৬৪ রানের টার্গেটে পঞ্চম ওভারেই ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে হারায় তামিম একাদশ। ৭ রান করে নাজমুল একাদশের পেসার তাসকিন আহমেদের বলে বিদায় নেন বিজয়। এরপর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে ৬৮ রানের জুটি গড়েন ফর্ম নিয়ে চিন্তায় থাকা তামিম একাদশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আগের তিন ম্যাচে ৪৪ রান করেছিলেন তামিম।
৪৫ বলে ২২ রান করে অঙ্কন থামলেও, ইনিংস বড় করাতে মনোযোগী ছিলেন তামিম। তাই আসরের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। দলের স্কোর শতরানে পৌছে দিয়ে বিদায় নেন এই ড্যাশিং ওপেনার। ৮৫ বল খেলে ৬টি চারে ৫৭ রান করে আবু জায়েদ রাহির বলে আউট হন তামিম।
দলীয় ১০১ রানে তামিমের বিদায়ের পর ২৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তামিম একাদশ। ইয়াসির আলি রাব্বি ৬, মোসাদ্দেক হোসেন ৬, শেখ মাহাদি হাসান ৪ ও আকবর আলি ১ রান করেন ফিরেন। মোসাদ্দেক-মাহাদি-আকবরের শিকারী ছিলেন তাসকিন। রাব্বিকে বোল্ড করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।
মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া তামিম একাদশকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। শেষ ভরসা হিসেবে তিনিই ছিলেন। কিন্তু ৪০তম ওভারে তৃতীয় বলে মিঠুনকে ২৯ রানে থামিয়ে তামিম একাদশের শেষ ভরসাকে ছেটে ফেলেন নাজমুল একাদশের আল-আমিন। তখন শেষ ৯ বলে ১৬ রানের প্রয়োজন ছিলো তামিম একাদশের।
আর শেষ ওভারে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১৫ রানের দরকার পড়ে তামিম একাদশের। কিন্তু ইনিংসের দুই বল বাকী থাকতেই ১৫৬ রানে অলআউট হয় তামিম একাদশ। ৮ ওভারে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ১টি করে উইকেট শিকার করেন আল-আমিন হোসেন, আবু জায়েদ-নাসুম আহমেদ ও সৌম্য সরকার। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাজমুল একাদশের তাসকিন।