ধর্ষণের জন্য ‘নারীবাদীদের’ দুষলেন সংসদ সদস্য (এমপি) রেজাউল করিম বাবলু, যিনি কিছুদিন আগে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ফেইসবুকে ছবি দিয়ে সমালোচনার পড়েছিলেন।
যৌন নিপীড়ন রোধে নারীদের পর্দার অন্তরালে রাখার যে কথা হেফাজেতে ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফী বলেছিলেন, তাতেও সমর্থন জানিয়েছেন এই আইন প্রণেতা।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল- ২০০০‘ পাস হয়। বিলটি পাসের আগে সেটি জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব তোলার সময় বাবলু আলোচনার জন্য দাঁড়ান।
তিনি বলেন, “এখানে কী দেখছি মাননীয় স্পিকার, নারীবাদীরা নারী স্বাধীনতার কথা বলে নারীদের উন্মুক্ত করে চলছে। যার কারণেই ধর্ষকেরা ধর্ষণের অনুভূতিকে এতটা একসেপ্ট করেছে যে ধর্ষণে উৎসাহিত হচ্ছে।”
ধর্ষণবিরোধী সাম্প্রতিক আন্দোলনের মধ্যে নারীবাদী বলে কাদের বুঝিয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি বাবলু।
বাংলাপিডিয়ায় নারীবাদকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে- “নারী ও পুরুষের মধ্যকার সমতার একটি মতবাদ, যাতে নারীর ওপর পুরুষের আধিপত্য বিস্তার রোধে নারীদের সংগঠিত হওয়ার উপর এবং সামাজিক জীব হিসেবে সমঅধিকার ও দায়িত্বের ভিত্তিতে নারী-পুরুষের জন্য সমাজকে নিরাপদ আবাসস্থলে রূপান্তরিত করার উপর গুরুত্ব দেয়।”
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাহজাহানপুর) এ ধানের শীষের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেলে সেই ফাঁকে বিএনপির সমর্থন নিয়ে সংসদ সদস্য হয়ে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবলু।
গত মাসে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বাবলুর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল ফেইসবুকে, সেটি তার বৈধ অস্ত্র বলে পরে জানান তিনি।
আহমদ শফীর পথে চলার আহ্বান জানিয়ে বাবলু বলেন, “আমি যেটা বলবো, আমরা ইতিপূর্বে আল্লামা শফি সাহেবকে তেঁতুল হুজুর বলে উল্লেখ করেছি মাননীয় স্পিকার।
“আল্লামা তেঁতুল হুজুরের তেঁতুল থিওরিটাও যদি কাজে লাগানো যেত, তাহলে ধর্ষকেরা ধর্ষণ থেকে পিছপা হত। ধর্ষণ থেকে তারা নিরুৎসাহিত হত। তাদের ভিতরে ধর্মীয় অনূভূতি আসত।”
২০১৩ সালে এক ওয়াজ মাহফিলে নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে সমালোচনায় পড়েন হেফাজতের ইসলামের আমির আহমদ শফী।
বাবলু বলেন, “এ আইনটা প্রয়োগের আগে আমাদের ধর্ষকেরা যাতে ধর্ষণের কাজে উদ্বুদ্ধ না হয়, তদের ভিতরে যেন ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত করে একটা মানবতা যেন ক্রিয়েট করে, তারা যেন মনুষ্যত্ব ফিরে পায়, এরকম একটা সিচুয়েশন যদি সমাজে থ্রো করা হয়, তাহলে এত কঠিন আইনের প্রয়োজন হবে না।
“একটা ফাঁসি কার্যকর করে একটা নাগরিক কমানোর প্রয়োজন হবে না। আমরা চাই ধর্ষক যেন না হয়। ধর্ষকের সংখ্যা যেন না বাড়ে।”