চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অপহরণের এক বছর পর পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর খাদে এক এনজিও কর্মকর্তার লাশের কঙ্কালের সন্ধান মিলেছে। ওই এনজিও কর্মকর্তার নাম হেলাল উদ্দিন (৪৩)।
বৃহস্পতিবার রাতে ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুরের একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা।
হেলাল উদ্দিনের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলবে। তার পিতার নাম আবদুল গণি। এর আগে বুধবার বিকালে অপহরণের সঙ্গে জড়িত মো. বিল্লাল হোসেন নামে একজনকে রামগড় থেকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে নিয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিবিআই টিম। শুরু করে লাশ উদ্ধারের অভিযান।
জানা গেছে, তথাকথিত কোটি টাকা মূল্যের তক্ষক কমমূল্যে বিক্রির নাম করে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাবুল সিকদার (৪২) নামে এক ঠিকাদার ও এনজিও সংস্থা সেতুবন্ধনের ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিনকে কৌশলে ফটিকছড়িতে নিয়ে আসে অপহরণকারীরা। তাদের দুজনের বাড়িই ঢাকায়।
ঢাকা থেকে তক্ষকের জন্য ফটিকছড়িতে আনার পর তাদের অপরহণ করে গভীর জঙ্গলে নিয়ে আটকে রাখে। অপহরণকারীরা তাদের পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ দাবির কয়েক দিনের মাথায় অপহরণকারীরা বাবুলকে মুক্তি দিলেও মুক্তিপণ না পাওয়ায় এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে হত্যা করে। পরে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছিল দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর খাদ বা গর্তে।
হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় জড়িত একজনকে পিবিআই আটকের পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এ ঘটনায় ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি হলেও দীর্ঘদিন হেলালের কোনো খোঁজ মিলছিল না। শেষপর্যন্ত ছদ্মবেশী পিবিআই সদস্যদের ফাঁদে ধরা দেয় মো. বিল্লাল নামে স্থানীয় এক তরুণ, সে অপহরণকারী দলের সদস্য ছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. বিল্লাল এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে হত্যা ও লাশ গুমের তথ্য দেয়ার পর শুরু হয় উদ্ধারের তৎপরতা। দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার অভিযানে ৫০ ফুট গভীর খাদটিও খনন করতে হয়। ওই খাদেই পাওয়া যায় হতভাগা হেলালের কঙ্কাল।