টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
পদ্মা নদীতে ট্রাক চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে

পদ্মা নদীতে ট্রাক চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদীর দুটি স্থানে ট্রাক চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীর বুকে ট্রাক চলাচলের রাস্তা করা হলেও বালু তোলা হচ্ছে তীর থেকেই। এতে সামনের ভরা মৌসুমে এলাকায় নদীভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বালুমহাল দুটির একটি গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলতলা গ্রামে। অন্যটি সেখেরপাড়া গ্রামে। বালুমহাল দুটির কর্মকাÐে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু প্রভাবশালী ইজারাদারদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না কেউ। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মূল নদী এখন পাড় থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাই দুটি বালুঘাট থেকেই গ্রামের পাশে পদ্মা নদীর তীর থেকে বালু তোলা হচ্ছে। আর ট্রাক চলাচলের জন্য নদীর বুকে করা হয়েছে রাস্তা। নদীর পাড় থেকেই বালু তোলার কারণে নদীভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অথচ সরকারি নীতিমালায় লেখা রয়েছে নদীর তীর থেকে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার মিটার দূরে নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করতে হবে। এই নিয়মের কোন তোয়াক্কাই করছেন না ইজারাদাররা। নদীর তলদেশের বদলে চর কেটেই ট্রাকে তোলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নদীপাড়ের মাটি কেটে তারা ইটভাটাতেও বিক্রি করছেন। অথচ বালুমহাল ইজারা নিয়ে মাটি কাটার কোন সুযোগ নেই।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার কয়েকজন সাংবাদিক সরেজমিনে যান। স্থানীয়রা জানান, মূল নদী বিভক্ত হয়ে দূরে সরে যাওয়ায় তীরে নদীর একটা অংশে তারা গোসলের কাজ সারেন। কিন্তু বালুঘাটের জন্য বসানো টং ঘরের কারণে এলাকার নারীরা নদীতে নামতে পারেন না। ওই টং ঘরে মাদক সেবন চলে বলেও অভিযোগ গ্রামবাসীর। আর সারারাত বালুর ট্রাক চলার কারণে তাদের ঘুম হয় না। স্থানীয়রা বলছেন, রাতে বিকট শব্দে পদ্মার তলদেশ থেকে বালুভর্তি ট্রাক সড়কে উঠে আসে। এই শব্দে তাদের ঘুম হয় না। ট্রাকে বালু পরিবহনের সময় ত্রিপল দিয়েও ঢাকা হয় না। এতে ধুলোবালুর কারণে দিনে তারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারেন না।

গ্রামবাসী এমন অভিযোগ করলে সেখেরপাড়া বালুমহালে থাকা লোকজন সাংবাদিকদের ওপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এসব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন। এ নিয়ে ফয়সাল হোসেন নামের একজন ফটোসাংবাদিক গোদাগাড়ী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখেরপাড়া এলাকার বালুঘাটটি ইজারা নিয়েছে সানজিদা এন্টার প্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর প্রোপ্রাইটর হলেন মনোয়ারুল হোসেন ডিপলু নামের এক ব্যক্তি। আর ভাটোপাড়া ফুলতলা এলাকার বালুঘাট ইজারা নিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক ব্যক্তি। তার প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স জাহাঙ্গীর অ্যান্ড সন্স। এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ থাকলেও এই দুই ইজারাদারের দাবি, সব নিয়ম-নীতি মেনেই তারা নদী থেকে বালু তুলছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর হোসেন বলেন, নদীর বুকে বালু তোলার রাস্তা করার কোন সুযোগ নেই। আমি নিজেই যাব, অথবা এসিল্যান্ডকে পাঠাব। সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নদী তীরে বালু তোলার বিষয়ে ইউএনও বলেন, নীতিমালার বাইরে গিয়ে কোনকিছুই করা যাবে না। সবকিছুই দেখা হবে।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital