যুক্তরাজ্যে ভাইরাসটির অধিক সংক্রামক এ ধরন শনাক্ত হওয়ার পর পরই দেশটির সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ। তবে এখনই ফ্লাইট বন্ধের কথা ভাবছে না বাংলাদেশ। আকাশপথে যোগাযোগ সচল রেখে সতর্কতা বাড়ানোর দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে সরকার।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা আসবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়াতেই বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। করোনার নতুন স্ট্রেইন পাওয়ার পর অনেক দেশ যেমন যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে, তেমনি কিছু দেশ চালুও রেখেছে। সেক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে তারা। বেবিচকও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ না রেখে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। সব দেশ থেকে আসার ক্ষেত্রেই কভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে এয়ারলাইনসগুলোর জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য থেকে যারা আসছে তাদের আলাদাভাবে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে চিকিৎসক ও ইমিগ্রেশনে যারা আছেন সবাইকে জানানো হয়েছে। ট্রানজিট ফ্লাইটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য থেকে যারা আসছেন তাদের একটি তালিকাও এয়ারলাইনসগুলো থেকে সংগ্রহ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ না করলেও লন্ডন থেকে যারাই আসবেন, তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, লন্ডন থেকে যারা আসবেন তাদের জন্য ঢাকার আশকোনার হজ ক্যাম্প ও দিয়াবাড়িতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা আছে। এর পাশাপাশি কিছু হোটেলও ঠিক করা থাকবে। সিলেটেও স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হবে।
বর্তমানে সাতটি দেশের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরি ফ্লাইট চালু রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও তুরস্ক রুটে চলমান এয়ারলাইনসগুলো ট্রানজিট ফ্লাইটের মাধ্যমে গোটা বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এর বাইরে সরাসরি ফ্লাইট চালু আছে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে।
এদিকে করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক নতুন ‘রূপ’-এর প্রাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। ২৩ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ রাখার পাশাপাশি দেশটিতে ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। এর আগে ২১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকাসহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি ফর সিভিল এভিয়েশন (জিএসিএ)। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অনুমতি দেবে। করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে কুয়েতও। আর ওমান সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় ২২ ডিসেম্বর থেকে মাসকাটগামী ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও ২৯ ডিসেম্বর থেকে তা চালু হচ্ছে। ওমান সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় আজ রাত থেকে বাংলাদেশ বিমানের মাসকাটগামী ফ্লাইটগুলো ফের নিয়মিত চলাচল করবে।