কিশোরী ফেলানী হত্যার ১০ বছর আজ। ২০১১ সালের এই দিনে বিএসএফের গুলিতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় কিশোরী ফেলানী। এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মহলে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হন দেশের উদ্দেশে।
পরদিন ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় ফেলানীর। সকাল পৌনে ৭টা থেকে নিথর দেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্টে ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।
বিএসএফের কোর্টে সাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফের বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় বিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আবার বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন নূর ইসলাম। ২০১৫ সালের ২ জুলাই আদালত পুনরায় আত্ম স্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়।
রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও হয়নি শুনানি। পরবর্তী সময়ে আরো কয়েক দফা শুনানির দিন ধার্য থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা সম্পন্ন হয়নি আজও। নূরুল ইসলাম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গিয়েছি। কিন্তু ১০ বছরেও কাঙ্ক্ষিত বিচার পেলাম না।
কুড়িগ্রামের সরকারি কৌঁসুলি এস এম আব্রাহাম লিংকন বলেন, ফেলানী হত্যার রিটটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য কার্যতালিকার তিন নম্বর পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমানে কোভিড-১৯-এর জন্য বিলম্ব হচ্ছে।