এই দিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি রেখা ও তার স্বামী এরশাদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন। শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বৃদ্ধা গৃহকর্ত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার পরই ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে চলে যান রেখা ও তার স্বামী। বুধবার (২০ জানুয়ারি) গভীর রাতে শাহজাহানপুর থানা পুলিশের একটি দল রাণীশংকৈল ও বালিয়াডাঙ্গি থানার সীমান্তবর্তী কাশিপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চোরাই স্বর্ণালঙ্কার, টাকা ও মালামাল উদ্ধার করা হয়। তবে, চুরি করা টাকার মধ্যে এক লাখেরও বেশি খরচ করে ফেলেছিলেন তিনি। বাকি ৬০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। শাজাহানপুর থানা পুলিশ জানায়, ঘটনার পর প্রথমে ডেমরায় আশ্রয় নেয় রেখা। পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে যায় ঠাকুরগাঁওয়ে মামার বাসায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার সকাল সোয়া দশটার দিকে প্রায় তিন বছর ধরে কিডনীসহ নানা সমস্যায় ভোগা বিলকিস বেগম শুয়ে ছিলেন বিছানায়। জোর করে বিলকিস বেগমকে বাথরুমে ঢোকান রেখা। এরই মাঝে খুলে ফেলে তার শরীরের সব কাপড়। শীতের সকালে বৃদ্ধার গায়ে ইচ্ছেমতো ঢালা হয় ঠাণ্ডা পানি। নির্যাতনের একপর্যায়ে আলমারির চাবির জন্য বুকের উপর চেপে বসে রেখা। বটি হাতেও তেড়ে আসেন তিনি। একসময় অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেন বৃদ্ধা বিলকিস বেগম। গলা থেকে চেইন খুলে পরে নেয় আয়েশি ভঙ্গিতে পরখ করে নেন হাতের বালা। তারপর আলমারির চাবির সন্ধান পায় এ গৃহকর্মী। কিন্তু খুলতে না পেরে রক্তাক্ত, অসুস্থ বৃদ্ধাকে টেনে নিয়ে বাধ্য করেন আলমারি খুলে দিতে। ড্রয়ার খুলে স্বর্ণ, নগদ টাকা, মোবাইল সবই নিয়ে নেয় রেখা।
পুরোটা সময় বিবস্ত্র বৃদ্ধা, নিজের হাতেই রক্ত থামাতে মাথায় কাপড় বাঁধেন। সব হাতিয়ে নেওয়ার পর কক্ষে তালা দেয় রেখা। সবকিছু গুছিয়ে ফাকা বাসায় আহত বৃদ্ধাকে ফেলে সবই নিয়ে পালিয়ে যায় গৃহকর্মী। পরে ২০ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থেকে রেখাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।