যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। শিনজিয়াংয়ে চীনের উইঘুর মুসলিম নিপীড়নের নীতিকে সমর্থন করে দূতাবাস একটি পোস্ট দেওয়ার পর টুইটার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। রয়টার্স।
চীনা দূতাবাস একাউন্ট ‘চাইনিজএমবিনইউএস’– এ এই মাসের শুরুর দিকে পোস্ট করা ওই টুইটে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পত্রিকা ‘চায়না ডেইলি’র একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘শিনজিয়াংয়ে উইঘুর নারীরা এখন আর শিশু তৈরির যন্ত্র নয়।’ উগ্রবাদ দূর করার প্রক্রিয়ায় শিনজিয়াংয়ে নারী-পুরুষ সমতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং প্রজনন স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটানো হয়েছে বলে পোস্টে উল্লেখ করা হয়।
টুইটার কর্তৃপক্ষ টুইটটি মুছে দিয়ে সেখানে ‘এটি আর পাওয়া যাচ্ছে না’লিখে লেবেল সেঁটে দিয়েছে। ওই পোস্টে মানবতাবিরোধী আচরণের বিরুদ্ধে টুইটারের নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উইঘুর জন্মনিয়ন্ত্রণে সংখ্যালঘু এই জনগোষ্ঠীর নারীদের জোর করে বন্ধ্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে চীনের বিরুদ্ধে। তবে বেইজিং এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের নীতি লঙ্ঘন হয় এমন টুইট হাইড করে থাকলেও একাউন্টের মালিককেও এ ধরনের পোস্ট নিজে থেকেই মুছে দিতে হয়। টুইটারের ওই পদক্ষেপের পর চীন বলেছে, বিষয়টি তাদের বোধগম্য হচ্ছে না।
শিনজিয়াং-সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে অনেক মিথ্যা এবং কুৎসা রটনা চলে। ফলে আসলেই কি ঘটেছে তা পরিষ্কার করে জানানো যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত দূতাবাসের দায়িত্ব এবং চীন এক্ষেত্রে ‘ভ্রান্ততথ্যের’ শিকার হয়েছে বলে যুক্তি দিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, ‘টুইটার বস্তুনিষ্ঠতা এবং পক্ষপাতহীনতার নীতিতে অটল থাকবে এবং এই বিষয়ে কোনও দ্বিমুখী নীতি নেবে না বলেই আমরা আশা করি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন মেয়াদ শেষের আগে দিয়ে শিনজিয়াংয়ে চীন সরকারের উইঘুর নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’র তকমা দেওয়ার পরপরই চীনা দূাতাবাসের টুইটার একাউন্ট বন্ধের এ পদক্ষেপ এল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাইডেন প্রশাসন এখনও টুইটারের এ পদক্ষেপের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি বলে।
চীনে টুইটার ব্যবহার আগে থেকেই বন্ধ। তবে চীনা কূটনীতিক ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে থাকে। ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস ২০১৯ সালের জুন থেকে টুইটার চালু করেছে। তবে টুইটারের একাউন্ট বন্ধের পদক্ষেপ নিয়ে দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলেনি।