গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে কয়েদির সঙ্গে নারী সাক্ষাতের ঘটনায় ডেপুটি জেলারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সম্প্রতি কারাগারে বন্দি দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম কেলেঙ্কারি হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা ও হলমার্কের কর্মকর্তা (মহাব্যবস্থাপক) তুষার আহমদের সঙ্গে এক নারীর একান্তে অবস্থানের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার পর এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ওই দুইজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনাটির তদন্ত করছে দুটি দল। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ফুটেজটি প্রকাশিত হলে তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারে প্রবেশের মাঝে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের জামাকাপড়র পড়ে সাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করছেন হলমার্ক কেলেঙ্করীর সঙ্গে জড়িত হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ পড়া এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের কারাগারে অবস্থানকালেই ওই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করে। তাকে সেখানে রিসিভ করেন খোদ ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। অনুমানিক এর ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে নিয়ে আসেন।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবুল কালাম বলেন, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও মো. ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন জানান, ২১ জানুয়ারি তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার সঙ্গে উপ-সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মো. আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করা হয়েছে। অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন আরো জানান, ঘটনার তদন্তকালে ওই বিষয়ে কোন মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তদন্ত শেষে বিষয়টি জানানো হবে।এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাশিমপুর কারাগার পার্ট-১ এর জেল সুপার রত্না রায় ফোন রিসিভ করেননি।
তবে ওই কারাগারের জেলার নূর মোহাম্মদ বলেন, ঘটনাটি তদন্ত চলছে। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।