সোমবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু ‘উগ্রপন্থি ও তাদের সহযোগী, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসব করছে’, তাদের এই ‘বেপরোয়া অপপ্রচারকে’ বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে।
‘এই প্রতিবেদন একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্র ইংগিত ছাড়া আর কিছু নয়, যা আসলে চরমপন্থি গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কুখ্যাত কিছু ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘অপপ্রচার’, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক নীতির বিরোধিতা করে আসছে।’
‘এই প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের নৃশংস গণহত্যার কথা এমনকি উল্লেখও করা হয়নি। জামায়াতের অপরাধীরা সে সময় লাখ লাখ বেসামরিক বাঙালিকে হত্যা করে এবং দুই লাখের বেশি নারীকে ধর্ষণ করে। এটা আল জাজিরা এবং তাদের প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানের রাজনৈতিক পক্ষপাতেরই প্রতিফলন, যে বার্গম্যান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আল জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মূল সূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরাই ‘সাইকোপ্যাথ’ আখ্যায়িত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও সেখানে নেই। আর মানসিক ভারসাম্যহীন কারও কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।’
‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে জামায়াতে ইসলামীর মদদপুষ্ট কয়েকজন দণ্ডিত পলাতক অপরাধী এবং কুখ্যাত ব্যক্তি তাদের চিরাচরিত ছকে বাংলাদেশবিরোধী এই অপপ্রচার সাজিয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উগ্র গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে আল জাজিরার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কিছু উগ্রপন্থি ও তাদের সহযোগী, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসব করছে, তাদের এই বেপরোয়া ‘অপপ্রচারকে’ বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে। বাংলাদেশের অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য যেখানে সরকারের ভূমিকা প্রমাণিত, সেই অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকারকে কক্ষচ্যুৎ করার লক্ষ্য নিয়ে সাজানো হীন রাজনৈতিক ছক বাস্তবায়নে আল জাজিরা নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে, এটা হতাশাজনক।’