টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি!

গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি!

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময়ে গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের আদি ধর্মস্থানে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।ওড়াকান্দি হচ্ছে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা কয়েক কোটি মতুয়ার কাছে সম্প্রদায়টির প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের ‘লীলাক্ষেত্র’।

ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের আদি ধর্মস্থানে নরেন্দ্র মোদি এমন একটা সময়ে যেতে পারেন, যার একদিন পর থেকেই শুরু হবে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। তিনি মতুয়াদের মন জয় করতেই চলতি মাসে আরও পরের দিকে সেখানে যেতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।

এবিষয়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের একটি অংশের সঙ্ঘাধিপতি ও বিজেপির সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের আদি পীঠস্থানে যান, তার একটা প্রভাব তো এখানকার রাজনীতিতে পড়বেই। আর প্রধানমন্ত্রী কেন, কোনও স্তরের মন্ত্রীই সেখানে কোনদিন যাননি। ওড়াকান্দি মতুয়াদের কাছে একটা আবেগের জায়গা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, পশ্চিমবঙ্গের এবারের নির্বাচনে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে। একদিকে যেমন মতুয়াদের একাংশ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে এবার লড়াই এতটাই হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে মনে করা হচ্ছে যে মতুয়া ভোট অনেক আসনেই নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে।

এবিষয়ে কলকাতার সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক অরুন্ধতী মুখার্জী বলেন, এবারের নির্বাচনেই দেখছি ছোট ছোট সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীর ভোটের জন্য কী তৃণমূল কংগ্রেস কী বিজেপি – দু’পক্ষই উঠে পড়ে লেগেছে। বিজেপির দেয়া প্রতিশ্রুতিমতো নাগরিকত্ব আইন চালু না হওয়ায় মতুয়াদের একটা বড় অংশ হতাশ হয়ে পড়েছে। তাই নিশ্চিতভাবেই ভোটের আগে তাদের মন জয় করার একটা চেষ্টায় ওই ধর্মীয় তীর্থস্থানে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া।

এদিকে বিজেপি সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুরও মেনে নিয়েছেন যে, নাগরিকত্ব আইন চালু না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সেটা অমিত শাহ’র সাম্প্রতিক সফরে মতুয়াদের প্রধান কেন্দ্র ঠাকুরনগরে এসে প্রতিশ্রুতি দেয়ার মাধ্যমেই কেটে গেছে।

কিন্তু মতুয়ারা কি পশ্চিমবঙ্গের ভোটে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে প্রধানমন্ত্রীকেও বিদেশ সফরে গিয়ে তাদের আদি ধর্মস্থানে যেতে হবে? কেন মতুয়াদের এতটা গুরুত্ব পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে?

এবিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বজিত ভট্টাচার্য বলেন, পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু এলাকায় মতুয়াদের ভোট আসলে হারজিত নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বনগাঁ এবং বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অন্তত ১৪টি বিধানসভায় মতুয়া ভোটই ঠিক করে দেয় যে কে জিতবে। এছাড়া নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণার মতো জেলাগুলির প্রতিটি বিধানসভা ক্ষেত্রেই কোথাও পাঁচ, কোথাও দশ হাজার করে মতুয়া আছেন। এবারের ভোট যেহেতু খুব হাড্ডাহাড্ডি হবে, তাই ওই পাঁচ-দশ হাজার ভোট কিন্তু নির্ণায়ক হয়ে উঠতে পারে। সেজন্যই মতুয়া ভোট নিশ্চিত করা বিজেপি বা তৃণমূলের কাছে অতি জরুরি।

শান্তনু ঠাকুর যদিও মনে করেন, ওড়াকান্দিতে মোদির সফর পশ্চিমবঙ্গের ভোটে একটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে তার দলের ওপর।

তবে তৃণমূল কংগ্রেস-পন্থী মতুয়া মহাসঙ্ঘের কার্যকরী সভাপতি সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাসের এক্ষেত্রে দ্বিমত রয়েছে। তিনি বলেন, বিজেপির ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন মতুয়াদের আদি ধর্ম-পীঠে গিয়ে সেই ক্ষতি পূরণ করা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব না। এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তারা নাগরিকত্ব আইন চালু করার প্রতিশ্রুতি একাধিকবার দিয়েছে – এমনকি প্রধানমন্ত্রীও এসে বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তো কবে আইন চালু হবে, তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। ঠাকুর হরিচাঁদ গুরুচাঁদের আদি লীলাক্ষেত্রে গিয়ে সেই ড্যামেজ কি আর কন্ট্রোল করতে পারবে বিজেপি?

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে এবারের ভোটে খুব বেশিভাবে প্রকট হয়ে উঠেছে সম্প্রদায় এবং ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী ভিত্তিক রাজনীতি। ছোট ছোট যেসব সম্প্রদায় আছে একেকটি অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত হয়ে, তাদের সমর্থন পেতে চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়েই। এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একেবারেই নতুন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র: বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital