২০১৫ সালে সম্পাদিত ঐতিহাসিক ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর প্রতিনিধিরাই কেবল তেহরানের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেবেন। শুক্রবার ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আলজাজিরা।
এদিকে পরমাণু চুক্তি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে আলোচনার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটাকে ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয়েই পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ইস্যুতে তেহরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে চাইছে ওয়াশিংটন। অবশ্য চুক্তিতে ফিরতে চাইলেও জানুয়ারি থেকেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কে আগে পরমাণু চুক্তিতে ফিরবে তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের পর ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় ফেরার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলার বিষয়ে তেহরানের অঙ্গীকার করার আহ্বান জানায় ওয়াশিংটন।
তবে ইরানের দাবি, আগে তাদের ওপর থেকে সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে, এরপরই সমঝোতায় ফিরবে দেশটি। এবিষয়ে উভয় দেশ অনড় অবস্থানে থাকায় পরমাণু সমঝোতায় ফেরা নিয়ে সৃষ্টি হয় অনিশ্চয়তা।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ইইউ জানায়, ‘ইরানের সঙ্গ স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশনে (জেসিপিওএ) অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলো আলোচনায় বসবে। একইসঙ্গে এই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং সকলপক্ষই কিভাবে সেটা মেনে চলতে পারে; সেটাও আলোচনা করা হবে।’
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।
তবে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্য, ওষুধ ও কোভিড-১৯ টিকা আমদানিতেও বাধার মুখে পড়ছে দেশটি
এদিকে শুক্রবারের এই বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বারবার বলে এসেছি যে, ওয়াশিংটন এই পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে ইচ্ছুক। আমরা চাই ইরানও একই কাজ করুক।’ তিনি আরও বলেন, পারস্পারিক সমঝোতামূলক পদক্ষেপের মাধ্যমেই এই চুক্তি আবারও কার্যকর করতে চায় ওয়াশিংটন।