এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি দপ্তরগুলোতে ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কর্মকর্তা, অসুস্থ কর্মকর্তা, গর্ভবতী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসায় থেকে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, করোনা মহামারি আবারও বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আগের মতো কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে রোস্টার তৈরি করেছি। সেই অনুযায়ী অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৮ দফা নির্দেশনার প্রতিটি বিষয় মেনে অফিস কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
অন্য সব মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে হারুন বলেন, অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করা সব সরকারি দপ্তরের জন্য বাধ্যতামূলক। ইতোমধ্যে অধিকাংশ সরকারি দপ্তর রোস্টার তৈরি করে অর্ধেক জনবলে অফিস কার্যক্রম শুরু করেছে। যারা (যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ) এখনো দায়িত্ব বণ্টন করে রোস্টার তৈরি করতে পারেননি তারা আগামীকাল রোববার থেকে অবশ্যই তা পালন করবেন। কারণ এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা।
এর আগে ৩১ মার্চ নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে অর্ধেক জনবল নিয়ে সরকারি অফিস পরিচালনার বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে ২৯ মার্চ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেখানে বলা হয়- জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান শিল্প-কারখানা ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী, অসুস্থ, বয়স ৫৫ ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, প্রজ্ঞাপনে সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে ৫০ শতাংশ জনবল নিয়ে অফিস পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে বার্তা দিয়েছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। যেহেতু হঠাৎ করে এটি, তাই কেউ কেউ হয়তো ৭০ শতাংশ করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি দু-একদিনের মধ্যে যারা অত্যন্ত জরুরি কাজে সম্পৃক্ত নন সেখানে জনবলের অর্ধেক থাকবেন।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, অধিকাংশ মন্ত্রণালয় সেটা (নির্দেশনা) বাস্তবায়ন করেছে, আমি মনে করি যদি কেউ বিভিন্ন কারণে করতে পারেনি, আমাদের তো কমিটমেন্ট আছে এ দিনের মধ্যে সার্ভিসটি দিতে হবে, সেখানে হয়তো ৭০-৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। ডিউটি রোস্টার ভাগ করে দেয়ার একটি বিষয় রয়েছে, আমার মনে হয় দ্রুত সেটা করতে যাচ্ছি। সরকার খুব আন্তরিক যে, এ সংক্রমণটা আমাদের রোধ করতে হবে। আগের অভিজ্ঞতা আছে, চোখের সামনে দেখলাম সংক্রমণ কীভাবে বেড়ে গেল, আবার আমাদের সদিচ্ছার মাধ্যমে সেটা কমে গেল। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকারি অফিসগুলো আগেও এ অনুশাসন মানার ক্ষেত্রে বিশেষ করে আমাদের মন্ত্রণালয় শতভাগ সফল ছিলাম। সেভাবেই এবারও আমরা দ্রুত করতে পারব।
অর্ধেক জনবল দিয়ে অফিস করার ক্ষেত্রে কাজে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে অনেকে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমরা এখন ওয়েল ইকুইপড, ডিভাইসগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয় আমরা জানি। আমরা একটি বছর কীভাবে বাসা থেকে অফিস করতে হয় সেটা সফলভাবে পরিচালনা করেছি। আমরা যে ডিউটি রোস্টার করব সে অনুযায়ী হয়তো কাউকে কাউকে তিন দিন অফিসে থাকতে হবে, দুদিন বাসায় থেকে কাজ করবে। পরের সপ্তাহে আবার যারা বাসায় ছিলেন তারা অফিস করবেন। ইতোমধ্যে ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কর্মকর্তা, অসুস্থ কর্মকর্তা, গর্ভবতী নারী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন তারা বাসায় থেকে কাজ করছেন আমরা সেই নির্দেশনা দিয়েছি।