স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে পাবনার চাটমোহরের ছাইকোলা ও হান্ডিয়াল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গুমানী নদীর ছাইকোলা পয়েন্টে পল্লী সড়কে গুরত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ৯৬ মিটার পি.এস.সি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ (প্যাকেজ নং এ/ই/চধন/ড-৯) কাজ দ্রত গতিতে এগিয়ে চলছে। আগামি ৩০ এপ্রিল এর মধ্যে এ ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে আশ পাশ এলাকার প্রায় দশ গ্রামের মানুষসহ লক্ষাধিক মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। গুমানী নদী পারাপার হতে বর্ষায় এ এলাকার মানুষকে খেয়া নৌকার অপেক্ষায় নদী পাড়ে বসে অপেক্ষা করতে হয়। বর্ষা শেষে নদীর পানি কমে গেলে বাঁশের সাঁকো দেওয়া হয়। এসময় তাদের সাঁকোর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হতে হয়। ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে নদীর দুপাড়ের কয়েকটি গ্রামের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ নদী পাড়াপারের বিড়ম্বনার শিকার থেকে মুক্তি পাবেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারী পাবনা-৩ (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর) আসনের এমপি আলহাজ্ব মোঃ মকবুল হোসেন ব্রীজটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। সেতুটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ৮ কোটি ২২ লাখ ২৮ হাজার ১৪৪ টাকা। চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৬ টাকা। কাজ শুরুর তারিখ ৭ জানুয়ারী ২০১৯। ৩০ এপ্রিল ২০২১ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ করছেন রংপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আলমগীর জাহান এন্ড খাইরুল কবীর জেভি।
চরনবীন হামিদা মমতাজ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং চরনবীন গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আকরাম হোসেন জানান, ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে নদীর পূর্বপারের চরনবীন, নবীন, লাঙ্গলমোরা, বরদানগর এবং পশ্চিমপাড়ের ছাইকোলা, কাটেঙ্গাসহ আশপাশের দশ বারোটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে। চাটমোহর সদর থেকে বাড়ি যেতে আমাদের এ নদী পার হতে হয়। অনেক সময়ই রাতের বেলা খেয়াঘাটে মাঝি না থাকায় আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে এ এলাকার মানুষ খুবই উপকৃত হবে। ছাইকোলা গ্রামের কলেজ শিক্ষক হাসিনুর রহমান জানান, নদীর পশ্চিম পাড়ে ছাইকোলা গ্রামের অবস্থান। বৃহত এ একটি গ্রামের প্রায় ৪০ টি পাড়ায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। নদীর পূর্বপারে চরনবীন হামিদা মমতাজ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজসহ একটি স্কুল ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। পশ্চিম পাড়ে ছাইকোলা ডিগ্রী কলেজ, ব্যাংক, ভূমি অফিস, হাট, বাজার, দাখিল মাদ্রাসা, ৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৩ টি উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশকিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাছাড়া পশ্চিম পাড়ের বসতিদের অনেক জমাজমি রয়েছে পূর্বপারের মাঠে। তাই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে এর উপর দিয়ে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে, দুপাড়ের শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, কৃষকসহ সব শ্রেণীর মানুষই উপকৃত হবে।
চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী রাজু আহম্মেদ জানান, কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ায় বেশ কিছুদিন ব্রীজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এ ব্রীজের একটি ব ঢালাই, দুই পাশের এপ্রোচ, ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তায় অপর একটি ছোট ব্রীজ নির্মাণ ও পশ্চিমপাড়ে সংযোগ সড়কের জন্য ১৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহনসহ কিছু কাজ এখনো বাঁকী রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ কাজ গুলো সম্পন্ন করার জন্য সময় বৃদ্ধির প্রয়োজন হতে পারে। সর্বোপরি বলা যায় ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও তা অত্র এলাকার মানুষের খুব উপকারে আসবে।