সোমবার দিনব্যাপী অভিযান শেষে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অভিযানে মাস্ক ব্যবহার না করা, হোটেলের ভেতরে খাবার পরিবেশসহ নানান অপরাধে ৪৬টি মামলায় এক লাখ ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডিএনসিসি জানায়, মহাখালী অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকীর নেতৃত্বে গুলশান-১, ২ এবং মহাখালী কাঁচাবাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এসময় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে উপস্থিত সবাইকে সচেতন করা হয়।
অভিযানে নানা অপরাধে ৪৬ মামলায় দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে কারওয়ান বাজার অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ হোসেনের নেতৃত্বে কারওয়ান বাজারের প্রধান সড়ক হতে সকল অবৈধ ভাসমান দোকান অপসারণ করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি হোটেলের ভেতরে লোকজনকে খাবার পরিবেশনের অপরাধে ৩৫ হাজার টাকা, সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে ১৮ জনকে এক হাজার ৮০০ টাকা, একটি হার্ডওয়্যারের দোকান খোলা রাখায় এক হাজার টাকাসহ মোট ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ফুটপাতে মালামাল রাখার দায়ে দুইজনকে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং রাস্তায় পেঁয়াজ মজুদ করায় তা জব্দ করে ৪ হাজার ২০০ টাকা নিলাম বিক্রি করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে মিরপুর-১০ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজের নেতৃত্বে মিরপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এসময় সংক্রমক ব্যাধি (প্রতিরোধ, প্রতিকার ও নির্মুল) আইন ২০১৮ এর ২৫ (১) ধারায় নির্দেশনা অমান্য করার অপরাধে ১৫ টি মামলায় মোট ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদের নেতৃত্বে নিকুঞ্জ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় তিনটি মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ ঢাকাটাইমসকে জানান, মন্ত্রিপরিষদ থেকে নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা মাঠে রয়েছেন৷
অফিসপাড়া বন্ধ থাকায় রাজধানীর মূল সড়কে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল অনেকটাই কম। কিন্তু পাড়া-মহল্লায় নাগরিকদের অবাধ বিচরণ সামাজিক দূরত্ব ভেঙে চলেছে৷ অন্যান্য দিনের চাইতে আজ যেন চায়ের দোকানের আড্ডা বেশি জমে উঠেছে। মহল্লায় ঘুরে বেড়ানো নাগরিকদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।
পাড়া-মহল্লায় সিটি করপোরেশনের অভিযান পরিচালিত হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সীমিত জনবলের কথা জানান এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমিত জনবল দিয়ে আমরা যতদূর সম্ভব সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।’
হরিরামপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের নেতৃত্বে উত্তরা এলাকায় অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে ৫০টি মাস্ক বিতরণ করা হয়। ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে মালামাল রাখায় একটি দোকানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
দক্ষিণখান অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বির আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত হাজী ক্যাম্প এলাকায় সাতটি মামার মোট ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পার্সিয়া সুলতানার নেতৃত্বে অঞ্চল ১০ এর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। মাছের বাজার, কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযানকালে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সচেতন করা হয় এবং মাস্ক বিতরণ করা হয়। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারা ভঙ্গের অপরাধে তিন জনকে জরিমানা করা হয়। এছাড়া রাস্তার চলাচলরত জনগণকে মাস্ক সঠিকভাবে পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সতর্ক করা হয়।
উত্তরখান অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবেদ আলীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত চারটি মামলায় চার হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করেন।
সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ভাটারা অঞ্চলের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় মোট ছয়টি মামলায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নিরীক্ষা কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসির উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত মিরপুরের ইব্রাহিমপুরে আটটি মামলায় মোট ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।