গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস বিশ্বের বিলিয়নিয়ার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে গত বছর চীনের রাজধানীতে নতুন করে ৩৩ জন শত কোটিপতি হয়েছেন। বর্তমানে ১০০ জন শত কোটিপতির বাস এই শহরে।
এর পরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, এখানে বাস করেন ৯৯ জন শত কোটিপতি। বিশ্বের অন্য যেকোনো বড় দেশের তুলনায় চীন দ্রুত করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর উন্নতি ও শেয়ারবাজারের উত্থান তাদের এই শীর্ষস্থানে নিয়ে এসেছে।
অবশ্য মোট সম্পদের হিসাবে এগিয়ে রয়েছে নিউইয়র্ক। অর্থাৎ বেইজিংয়ের ১০০ ধনকুবেরের যে সম্পদ, তার চেয়ে নিউইয়র্কের ৯৯ ধনকুবেরের সম্পদ বেশি। বেইজিংয়ের শীর্ষ ধনী জাং ইয়িমিং। তিনি ভিডিও-শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা ও বাইটড্যান্সের প্রধান নির্বাহী। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার ৫৬০ কোটি ডলার। বিপরীতে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে ধনী বাসিন্দা সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ। তার সম্পদের পরিমাণ ৫ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।
আসলে করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনীতিকে ওলটপালট করে দিলেও অতি ধনীদের কিছুই হয়নি। মহামারি চলাকালে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিগুলো আরও বড় হয়েছে। এখন বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষের কেনাকাটা জীবন অনলাইননির্ভর হয়ে পড়েছে, যা এই ধনীদের আরও ধনী করেছে। গত বছর চীনে নতুন করে ২১০ জন বিলিয়নিয়ার ক্লাবে ঢুকেছেন। তবে চীনের এই হিসাবে হংকং ও ম্যাকাউকে যুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ফোর্বসের ৩৫তম বার্ষিক বিলিয়নিয়ারের ওই তালিকা অনুযায়ী, করোনা মহামারির মধ্যেই বিশ্বে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় ২০২১ সালে বিশ্বে বিলিয়নিয়ার বেড়েছে ৬৬০ জন। এক বছরে এতজন এই শত কোটি ডলারের ক্লাবে এর আগে কখনো ঢুকতে পারেননি।
এবার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হওয়াদের মধ্যে ৪৯৩ জনই প্রথমবারের মতো বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি ১৭ ঘণ্টায় একজন ব্যক্তি বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। আর গোটা দুনিয়ায় বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৭৫৫ জনে উন্নীত হয়েছে। আর তাদের সম্মিলিত সম্পদের নিট মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন বা ১৩ লাখ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোস এবারও বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তার সম্পদের নিট মূল্য ১৭৭ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। ১৫১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন একই দেশের বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি টেসলার চেয়ারম্যান ও সিইও ইলন মাস্ক। ফ্রান্সভিত্তিক বিলাস পণ্যের ব্যবসায়ী বার্নার্ড আরনল্ট ১৫০ বিলিয়ন ডলারের নিট সম্পদ নিয়ে তৃতীয় হয়েছেন।