মার্কো জ্যানসেনের শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭ রান। ৩ বলে ৪ রান তোলার পর চতুর্থ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান এবি ডিভিলিয়ার্স। দল তখন ৮ উইকেটে ১৫৮ রানে দাঁড়িয়ে। ফলে বিরাটের দলকে জিততে হলে ২ বলে ২ রান করতে হত। আর রোহিতের দরকার ছিল ২ বলে ২ উইকেট।
পঞ্চম বলে সিরাজ মাথা ঠান্ডা রেখে ১ রান নেন। এরপর শেষ বলে এল জয়। ওভারের শেষ বলে ১ রান নিয়ে বিরাট কোহলির দলকে প্রথম ম্যাচেই জয় এনে দিলেন ২৭ রানে ৫ উইকেট নেওয়া হর্ষল প্যাটেল। ফলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২ উইকেটে জয় পেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (আরসিবি)।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসরে শুক্রবার রাতে উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি’র বিরাট। ব্যাটিংয়ে নেমে মুম্বাইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং ক্রিস লিন শুরুটা ভালই করেছিলেন। কিন্তু ১৯ রান করেই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান রোহিত। এরপর লিন-সূর্যকুমার দলের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। দুজনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ রানও যোগ করেন।
একসময় মনে হচ্ছিল, মুম্বাইয়ের রান হয়তো ১৮০ রান অতিক্রম করে যাবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা হয়নি। লিন-সূর্যকুমারের জুটি ভাঙতেই মুম্বাইয়ের রানের গতি কমে যায়। ৩৫ বলে ৪৯ রান করে আউট হয়ে যান ক্রিস লিন। সূর্য আউট হন ৩১ রানে।
এই সময় হর্ষল প্যাটেলের হাত ধরেই ম্যাচে ফেরে আরসিবি। চার ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট তুলে নেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রথম বোলার হিসেবে মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেটে নেওয়ার নজিরও গড়েন। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৯ রানেই থামে মুম্বাইয়ের ইনিংস। লিন-সূর্যকুমার আউট হওয়ার পর ঈশান কিষানই (২৮) কেবল রান পান দলের হয়ে। বাকিরা কেউই আর তেমন রান করতে পারেননি।
স্কোরবোর্ডে লক্ষ্যমাত্রা ১৬০। ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন আপে কোহলি, ম্যাক্সওয়েল, এবি ডিভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যান রয়েছেন। কিছুটা হলেও সুবিধা নিয়েই রান তাড়া করতে নামে আরসিবি। ফিল্ডিংয়ের সময় ডান চোখের নিচে আঘাত পেলেও ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে ওপেনিং করতে নামেন বিরাট। তবে সুন্দর (১০) কিংবা তিন নম্বরে নামা রজত পতিদার (৮) দ্রুত ফিরলেও বিরাট-ম্যাক্সওয়েল জুটি দ্রুতগতিতে রান তাড়া করতে থাকেন।
একসময় মনে হচ্ছিল সহজেই বিরাটরা জিতে যাবেন। কিন্তু মাত্র দুই ওভারের ব্যবধানে আচমকাই ফিরে যান দু’জনেই। বিরাট আউট হন ৩৩ রান করে। জানসেনের ওভারে আবার আউট হয়ে যান ম্যাক্সওয়েল (৩৯) এবং শাহবাজ আহমেদ (১)।
এই সময় রীতিমতো চাপেও পড়ে যায় আরসিবি। শেষপর্যন্ত রক্ষাকর্তা হয়ে দেখা দেন এবি ডিভিলিয়ার্স। প্রায় একাই আরসিবিকে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে জয় এনে দিলেন তিনি। করলেন ৪৮ রান। তাও আবার মাত্র ২৭ বলে। যদিও দুই বল বাকি থাকতেই রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। তবে তাতে আরসিবির জয় আটকায়নি। সেই হর্ষলই শেষ বলে দলের হয়ে জয়সূচক রানটি করেন।