৯ তরিখ দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এক আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, সেলবরষ ইউনিয়ন, পাইকুরাটি ইউনিয়ন, সুখাইর-রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন ও মধ্যনগর ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক তাদের বছরের একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এদিকে, ফসলহানীর ঘটনায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কান্না ও আহাজারিতে পুরো হাওর এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের কৃষক ইবাদুল ইসলাম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, বাড়ির পাশের কেউডির হাওর, কাডা আছরা হাওর ও মেধার হাওরে থাকা আমার প্রায় ১০ একর জমিতে এবার আমি দেড় লাখ টাকা ধার-দেনা করে বোরো আবাদ করেছিলাম। আমার সব জমির পাকতে শুরু করেছিল। তিনি বলেন, আগামি ২-৩ দিনের মধ্যেই আমার জমির পাকা ধান কাটার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে আমার সব শেষ কইরা দিছে। এক কেজি ধানও ঘরের তুলারমতো আর রইলনা। এখন আমি কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। একই ধরনের কথা বলেন এলাকার শত-শত কৃষক।
উপজেলার পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো, ফেরদৌসু রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে শীলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নের ভাটগাঁও,জামালপুর, বেখৈজুড়া, সুনুই ও আলীপুর এই পাঁচটি গ্রামের কৃষকের খুব বেশী ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, নাজমুুল ইসলাম বলেন, এবার চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৮টি হাওরে মোট ৩১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া এক আকস্মিত গরম ঝড়ো হাওয়ায় আশপাশের বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমাদের এখানে তেমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে ওইসব এলাকার কৃষকের প্রায় ১হাজার ৬ শত হেক্টর জমির পাকা ও আধা পাকা বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।