গতকাল বিভিন্ন মার্কেটে মানুষের ভীড়ের ভয়ানক নানা চিত্র চোখে পড়েছে। আর কেনাকাটার জন্য মানুষের শহরমুখি হওয়ার সুযোগে চার শতাধিক ইজিবাইকে দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। এর মধ্যে যশোর শংকরপুর কেন্দ্রীয় টার্মিনালে রীতিমত সিন্ডিকেট করে বেশুমার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আসা যাওয়া করছে যশোর শহর, শহতলী, গ্রামাঞ্চলসহ বিভিন্ন রুটে।
আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন আসছে এই ঘোষণায় যশোর শহর, শহরতলী এ গ্রামাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছে শহরের বিভিন্ন মার্কেটে। শহরের বড়বাজার, বিভিন্ন দোকানে ও মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই না মেনে, সামাজিক দুরত্ব না মেনেই গত দুদিন চলছে বেশুমার কেনাকাটা। গত ৩ দিন লকডাউন শিথিল করে দোকানপাট খোলা রাখার ঘোষণায় যেন ঈদের কেনাকাটাও সেরে ফেলছেন মানুষ। লকডাউন দীর্ঘ হতে পারে শঙ্কায় যশোরের বড় বড় বিপনী বিতান, বিশেষ করে কাপড়ের মার্কেটগুলোর বেহাল অবস্থা চোখে পড়ে। শহরের এইচ এমএম রোডের অধিকাংশ দোকানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে, সামাজিক দুরত্ব না মেনে চলেছে কেনাকাটা। বড় বাজার, কাঁচা বাজারে ছিল একই অবস্থা। ক্রেতা ও দোকানীদের দাবি, আবার ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউন আসছে, ওই লকডাউন কত দিন চলবে এ নিয়েও রয়েছে নানা শঙ্কা। আবার করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, কবে আবার দোকাান খুলবে, এসব ভেবে ক্রেতারা ভিড় করছেন। অনেকে আবার একই সাথে ঈদের কেনাকাটাও সেরে ফেলছেন। চেষ্টা সত্বেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। গত পরশু ও গতকাল সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত শহরের বড় বাজার, কাঁচাবাজার, বড় বড় শপিং মল, শহরের ব্যস্ত মোড়, এইচ এম এম রোড, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র রোড, রবীন্দ্রনাথ সড়ক, উপশহর খাজুরা বাস স্ট্যান্ড, পালবাড়ি, চাঁচড়া চেকপোস্টসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে ব্যাপক ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে শহরমুখি মানুষের ঢলকে পুঁজি করে ৪ শতাধিক ইজিবাইক দ্বিগুন তিনগুন ভাড়া আদায় করছেন বলে তথ্য মিলেছে। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাশিমপুর, ঝুমঝুমপুর, পুলেরহাট, এড়েন্দা, পতেঙ্গালি, নারাঙ্গালি, শেখহাটি, ভেকুটিয়া, মনোহরপুর, বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ইজিবাইকযোগে মানুষ শহরে এসেছেন।
এদিকে, যশোরের শংকরপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দুই শতাধিক ইজিবাইক চালক অতিরিক্ত ভাড়া ধার্য্য করে স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই চলাচল করছে। রীতিমতো সিন্ডিকেট করে তারা গলাকাটা বাণিজ্য করে চলছে। ইজিবাইক সি এনজি যাত্রীদের থেকে তিনগুণ ভাড়া নিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আবার একটি বাইকে ছয় জন যাত্রী নিয়ে ঝিকরগাছা বেনাপোল চৌগাছা কালীগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে যাওয়া আসা করছে। রাস্তায় টার্মিনালে পুলিশকে ম্যানেজ করতে হচ্ছে ধুয়ো তুলে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। গত কয়েকদিন নিয়ম করে চালকরা এটি করে আসছেন। আবার কঠোর লকডাউন আসছে ঘোষণায় বেশি ভাড়া আদায় করছেন। আর মানুষ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে দিকবিদিক ছুটার মত করে শহরমুখি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি তৌহিদুল ইসলাম গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিনই করোনা রোগী বাড়ছে, একই সাথে দেশ জুড়ে মৃত্যু আতঙ্ক। ভয়ানক পরিস্থিতি ওভারকাম করতে ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলো সর্বশক্তি প্রয়োগ করে মাঠে নেমেছে। যশোরাঞ্চলের মানুষ সচেতন না হয়ে এখনও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। স্বাস্থ্য বিধি না মেনে লকডাউন উপেক্ষা করে ঘর থেকে অকারণে রেব হচ্ছেন। মোটরসাইকেল হাকিয়্,ে ইজিবাইকে ছুটে আসছেন শহরে। মার্কেট খোলা মানে এই নয় যে আমরা সচেতন থাকবো না। পুলিশ মানুষকে সচেতন করছে, শহরে ও গ্রামাঞ্চলেও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। জনস্বার্থে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে যত্নবান হওয়ার আহবান জানান তিনি।