বুধবার থেকে লকডাউন হবে আরো কড়াকড়ি। তাই অন্যদিনের তুলনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর রা জধানী ফাঁকা হতে শুরু করে। রাস্তায় ব্যক্তিগতগাড়িসহ অন্যান্য পরিবহন ছিল তুলনামূলক কম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। ধানমন্ডি ৭/এ। আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে এক নারী কথা বলছিলেন একাধিক সিএনজি চালিত অটোরিক্সার চালকদের সঙ্গে। তার গন্তব্য রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুর। অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় তিনি যেতে পারছিলেন না। প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর দিশেহারা হয়ে পড়েন ওই নারী। এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন।
কাঁদছেন কেন? এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী জানান, আব্দুল্লাহ পুর যাব, সিএসজি চালকরা ৬/৭শ’ টাকা ভাড়া চায়, আমার কাছে ৩/সাড়ে ৩শ’ টাকা আছে। বাসায়ও কোনো টাকা নেই। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে এখানে আছি, কিভাবে যাব বুঝতে পারছিনা।
আর তখন ওই নারীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ধানমন্ডি ট্রাফিক ডিভিশনের ৪ পুলিশ সদস্য। এএসআই শাকিল, এএসআই ফরিদ, এএসআই ফারুক ও কনস্টেবল ফারুক।
সব কথা শুনে কনস্টেবল ফারুক রাস্তা থেকে নিয়ে আসেন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা। অন্যরা গন্তব্যে যাওয়ার দর কষাকষি করেন। ৭শ’ টাকা ভাড়া চেয়ে ৬শ’ টাকার নিচে যাবেন না বলে জানান সিএনজি অটোরিক্সা চালক।
আর তখন চালককে নানা ভাবে বুঝিয়ে মানবিকতার প্রশ্নতুলে অনুরোধ করেন এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা। অবশেষে সাড়ে তিনশ’ টাকায় যেতে রাজি হন সিএনজি অটোরিক্সা চালক।
তবে ওই নারী একা ছিলেন, ভয়ও পাচ্ছিলেন । তাই কনস্টেবল ফারুক ওই নারীর, চালক ও সিএনজি অটোরিক্সার নম্বর প্লেটের ছবি তুলে রাখেন। আর এক ঝলক খুশির আভাফুটে ওঠে ওই নারীর চোখে-মুখে। যেন তিনি রাজ্য জয় করে ফেলছেন।
পুলিশ সদস্যের ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে এমনই হোক আমাদের পুলিশ, পুলিশ হোক সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা।
এএসআই ফরিদ বলেন, চেষ্টা করি মানুষের সেবা করতে। যদিও সবসময় পরিস্থিতি অনুকুলে থাকেনা।
এএসআই শাকিল বলেন, পুলিশ আগের চেয়ে অনেক মানবিক, মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশী সেবা পায়। সব সময় চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়াতে।