বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অগ্নিকান্ডটি ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট রাত ১২টা থেকে একযোগে কাজ করে পৌনে একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
এদিকে, অগ্নিকান্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকেরা সেখানে ছুটে আসেন। চোখের সামনে সব শেষ হয়ে যাওয়া দেখে তারা নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি। সবার বুকফাটা আর্তনাদে সেখানে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়। রাত একটার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থল থেকে দৈনিক গ্রামের কাগজের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ফয়সল ইসলাম জানান, রাতে অফিসের কাজ শেষ করে তিনি এবং পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আসাদ আসাদুজ্জামান বাড়ি ফেরার পথে টাউন হল ময়দানের দিক থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখতে পান। সাথে সাথে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যেয়ে দেখেন টাউন হল ময়দানের দক্ষিণ পাশে যশোর জেলা পরিষদের সাথে লাগোয়া পুরাতন কাপড়ের মার্কেটে অগ্নিকান্ড ঘটেছে। তাৎক্ষণিক তিনি সাহায্যের জন্য ৯৯৯ ফোন করেন। ফোন পেয়ে যশোর ফায়ার সার্ভিসসহ সংস্থার স্থানীয় চারটি ইউনিটের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা একসাথে কাজ করে পৌনে এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এরই মধ্যে পুড়ে যায় পুরাতন কাপড়ের অন্তত ২০টি দোকান। অবশ্য সেখানে উপস্থিত যশোর পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবির সুমন জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের সংখ্যা আরও বেশি। আগুনে সবকিছু পুড়ে একাকার হয়ে যাওয়ায় মোট কতটি দোকান ভস্মিভূত হয়েছে তা সঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না।
ফয়সল ইসলাম আরও জানান, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এক সময় আগুনের লেলিহান শিয়ায় চারদিক লাল হয়ে যায়। এসময় আগুনের তাপে তেউ কাছে যেতে পারছিলেন না। দূর থেকে আগুনের শিখা দেখে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেখানে এসে ভীড় জমান। কিন্তু, কারোরই তেমন কিছু করার ছিল না।
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া এবং সিনিয়র স্টেশন অফিসার আজিজুল হক জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোতে কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। সবকিছু ভস্মিভূত হয়েছে। তারা জানান, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট একসাথে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কী কারণে আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না বলে উল্লেখ করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ওই দু’কর্মকর্তা।
এদিকে, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় সব হারানোর বেদনায় তাদের বুকফাটা আর্তনাদে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, যশোর কালেক্টরেট মার্কেট এবং যশোর টাউন হল ময়দান গরিবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। চলমান লকডাইনের কারণে গত আটদিন এই মার্কেট বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগুন লাগার কারণটি কেউ বুঝতে পারছেন না।