টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
অবৈধ সঞ্চয় সমিতির রসানলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

অবৈধ সঞ্চয় সমিতির রসানলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার অনেক এলাকায় রমরমা ভাবে চলছে সুদের ব্যবসা। মানুষকে নিঃস্ব করে পথে বসানোর অন্যতম উপায় সুদের ব্যবসা। আর এখন সুদ মানুষকে নিঃস্ব করার ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বর্তমানে এ ব্যবসা জমজমাট ভাবে চলছে উপজেলার পৌর শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গ্রামান্তরে। ফলে সুদ ব্যবসায়ীদের রসানলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। অথচ এসব দেখার কেউ নেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার পৌর শহর এলাকা সহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে একচেটিয়া ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজে ওঠা অবৈধ সঞ্চয় সমিতি ও মুদি দোকানীরাও দিন সমিতি ১০ টাকা থেকে ৫ শত টাকা দৈনিক জমার পাশবই চালু করে সুদ ব্যবসা অব্যাহত রাখে। আদ্যই এসব সঞ্চয় সমিতির কোন বৈধ কাগজপাতি আছে কিনা খাতয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কশন করছি। এই সঞ্চয় সমিতির লোকদের বাহির থেকে যতই সুন্দর দেখা যাক না কেন, ভেতরটা এতটাই কুৎসিত যা বলে শেষ করা যাবে না। এই সুদের ব্যবসা ইসলাম ধর্ম বাদে অন্যান্য ধর্মে বৈধতা আছে কিনা তা জানা নেই? তবে ইসলাম ধর্মে ঘোর বিরোধীতা করা হয়েছে অবৈধ সুদখোরদের বিরুদ্ধে। এই সুদের ব্যবসা এমন এক পর্যায়ে গিয়েছে যে, হজ্জ্ব করে এসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েও সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সবার আড়ালে এমনকি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও এই সুদখোর লোকজনকে নামাজের প্রথম কাতারে বসে নামাজ পড়তে দেখা যায়। আর এই সুদ শুধু ব্যক্তিগত ভাবে নয়, উপজেলার শহর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় অবৈধ সঞ্চয় সমিতির নামে চলছে একচেটিয়া সুদের ব্যবসা। এখানে লাভবান হচ্ছে কিছু অসাধু লোকজন, যারা এই সঞ্চয় সমিতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন।

আর্থিক প্রয়োজনের বেকায়দায় পড়ে ওইসব সুদ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ছে মধ্যবিত্ত পরিবার, কৃষক, বর্গাচাষী, স্বল্প আয়ের লোকজন সহ স্কুল, মাদ্রাসা, বেসরকারি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। তারা এই কষ্টকর জীবন অতিবাহিত করতে গিয়ে বিপদে পড়ে বাধ্য হয়ে ঐ সব সুদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ১৫০-৩০০ টাকা ননজুডিশিয়াল সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর বা টিপ দিয়ে এমনকি ব্যাংকের বø্যাঙ্ক চেক দিয়ে টাকা নিতে হয়। আর এই সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষী নেওয়া হয় সুদ ব্যবসায়ীদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের এবং ইচ্ছে মতো সাদা ষ্ট্যাম্প পূরণ করে রাখেন কিংবা প্রয়োজন মতো লেখার জন্য ষ্ট্যাম্প ফাঁকা রাখেন। আর বেকায়দায় পড়া ব্যক্তিদের সুদ ব্যবসায়ীদের চাপে জমির দলিল পত্রাদি, স্বর্ণালংকার, চাকরিজীবিদের মাসিক বেতনের চেকও বন্ধক রাখতে বাধ্য হচ্ছে সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে। দৈনিক, সাপ্তাহিক এমনকি মাসিক ভিত্তিতে নগদ ঋণ দিয়ে দেড় থেকে দুই গুণ মুনাফা আদায় করে সুদ ব্যবসায়ীরা। সুদ ব্যবসায়ীদের অত্যাচার ও লাঞ্চনার নজিরও রয়েছে অনেক। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে বলেও অভিযোগ আছে।

একদিকে যেমন সুদ ব্যবসায়ীরা সম্পদের পাহাড় গড়ছে, অন্যদিকে সাধারণ ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ দিনদিন গরীব ও ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে। অথচ সুদ ব্যবসায়ীদের এমন কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও নেই কোন পদক্ষেপ। সঠিক আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা না থাকার কারণে ঋণের নামে এসব শোষণ বেড়েই চলছে। সুদ ব্যবসায়ীদের সার্বিক এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অন্যথায় আত্মহত্যা সহ মারামারি, হানাহানি, দ্ব›দ্ব-ফ্যাসাদ সহ অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital