টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
হালদায় ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় মা মাছ

হালদায় ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় মা মাছ

মিঠা পানির মাছের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে চট্টগ্রামের হালদা নদী বিশ্বে অনন্য। প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে আনাগোনা শুরু হলেও লাগাতার বজ্রসহ বৃষ্টি, শীতল আবহাওয়া ও পাহাড়ি ঢল না থাকায় মা মাছ ডিম ছাড়ছে না। কখন মা মাছ ডিম ছাড়বে এ অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন হালদা পাড়ের পোনা আহরণকারীরা।

প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন মাস বজ্রসহ ভারীবর্ষণের সময় হালদায় ডিম ছাড়ে মা মাছ। এ সময়টাতে হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীদের ব্যস্ততার সীমা নেই। ডিম আহরণের জন্য তারা নানান প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ নতুন নৌকা তৈরি করছেন, আবার কেউ নৌকা মেরামতে ব্যস্ত, কেউ কেউ মাটির কুয়া তৈরি করছেন ডিম থেকে রেণু তৈরির জন্য।

হালদা নদী দেশে স্বাদু পানির কার্পজাতীয় মাছের প্রধান প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে হালদা নদী চট্টগ্রামের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় ৯৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রবাহিত হয়ে মিশেছে কর্ণফুলী নদীতে।

জেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্য মতে, হালদার দুই পাড়ের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় ৬০০ জন ডিম সংগ্রহকারী রয়েছেন, যারা প্রতি মৌসুমে হালদা থেকে ডিম সংগ্রহ করেন।

জানা যায়, হালদা নদী থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার কেজি এবং ২০১৯ সালে ১০ হাজার কেজি ডিম আহরণ করা হয়। আর ২০২০ সালে ২৫ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করে রেকর্ড করেছে ডিম আহরণকারীরা।

মাছুয়াঘোনা মৎস্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ডিম সংগ্রহকারী শফিউল আলম বলেন, হালদা নদী আমাদের কাছে মায়ের মতো। এ নদীতে প্রতি বছর এপ্রিলের শেষের দিকে এবং মে মাসে মা মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময়টা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আগ্রহ আর উদ্দীপনার শেষ থাকে না কখন মা মাছ ডিম ছাড়বে। নদীকে রক্ষা করতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকি। আশাকরি বৃষ্টি হলে এবার আমরা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ডিম সংগ্রহ করতে পারবো।

হালদা বিশেষজ্ঞরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকায় নদীর দূষণ কমেছে। তাই চলতি বছর হালদা থেকে রেকর্ড পরিমাণ ডিম সংগ্রহের আশা করছেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরীয়া বলেন, হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার জন্য মার্চ থেকে মাছ নদীতে অবস্থান করছে। আশা করি, এবার মাছ রেকর্ড পরিমাণ ডিম ছাড়বে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রহুল আমিন বলেন, প্রজনন মৌসুম সামনে রেখে মা-মাছ শিকারিরা তৎপর। তাই আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। প্রতিদিন আমাদের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, হালদা থেকে কার্পজাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাউশ) মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়। হাটহাজারী-রাউজান-ফটিকছড়ি উপজেলা সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া এ নদীতে প্রতি বছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে ডিম ছাড়ে মা-মাছ। হ্যাচারি পোনার চেয়ে হালদার পোনা দ্রুত বর্ধনশীল বলে এ পোনার কদর সারাদেশে। ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করে তা থেকে রেণু ফুটিয়ে বিক্রি করেন। রেণুর আয় দিয়ে পুরো বছর জীবিকা নির্বাহ করেন তারা।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital