গাইবান্ধায় সম্প্রতি আলোচিত ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যার প্রধান আসামিও এই জুয়েল। তিনি সদর উপজেলার বল্লমঝাড়ের মাঠেরপাড় গ্রামের মৃত মোখলেসুর রহমানের ছেলে। গতকাল বিকালে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
মামলাসূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদুল ইসলাম জুয়েল চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা করে আসছিলেন। তিনি বিশ্বাস অর্জনের জন্য একজনকে প্রধানমন্ত্রী সাজিয়ে কথা বলাতেন। তার ভাই আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির বহিষ্কৃত উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রতারিতদের টাকা হাতিয়ে নিতেন। টাকা ফেরত চাইলে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
ফরিদুল ইসলাম জুয়েল চাকরির কথা বলে গাইবান্ধা সদরের ফুলবাড়ি গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও সাদুল্যাপুর উপজেলার ভাঙামোড়ের রেলের অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী দুলা মিয়ার ছেলে সোহেল রানা এবং শ্যালক নয়ন মিয়ার থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি চাকরির ভেরিফিকেশনের নামে পুলিশের নামেও টাকা হাতিয়ে নিতেন।
শহিদুল জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়ির পাশে দোকান দিয়ে তিনি ব্যবসা করতেন। তার বাবার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরে প্রতারক জুয়েল তাকে রেলের বুকিং সহকারী পদে চাকরি নিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এ জন্য ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। গত বছরের ২৩ জুন প্রথম দফায় বেশিরভাগ এবং পরবর্তীকালে ৬ সেপ্টেম্বর অবশিষ্ট টাকা নেয় জুয়েল। লিখিত পরীক্ষায় নির্বাচিত না হওয়ায় প্রতারক তাকে টাকা ফেরত দেবে বলে কথা দেয়। কিন্তু দিনের পর দিন ঘুরেও টাকা মেলেনি। গত ২৬ এপ্রিল টাকা চাইতে গেলে বরং উল্টো হুমকি ও জেল খাটানোর ভয় দেখায় ওই প্রতারক।
দুলা মিয়া জানান, নিজেকে ‘প্রধানমন্ত্রীর নাতি’ পরিচয় দিতেন জুয়েল। তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে কেউ কথাও বলেছেন। সে তার ছেলে সোহেলকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর ও শ্যালক নয়নকে রেলওয়ের বুকিং সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু নিয়োগ স্থগিত হওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে তাড়িযে দেওয়া হয়।
সোহেল রানা বলেন, টাকা চাইতে গেলে জুয়েল তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বাধ্য হয়ে থানায় প্রতারণার মামলা করেছি।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. মাহফুজার রহমান বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। জুয়েলের প্রতারণার আরও ঘটনা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি আরও তদন্ত চলবে।