এ ঘটনায় রোববার দুপুরে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন নগরীর ১২নং ওয়ার্ডের পরপর তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও দুই বারের প্যানেল মেয়র কে. এম শহিদুল্লাহ। বর্তমানে তিনি মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।
অভিযোগে ১নং আসামি করা হয়েছে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে। এছাড়া আরো ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। বিকেলে অভিযোগ নথিভুক্ত করে বিচারক মাসুম বিল্লাহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। তৌহিদ নগরীর আমবাগানের বাসিন্দা সাবেক কমিশনার মফিজুল ইসলাম ঝন্টুর ছেলে। কে. এম শহিদুল্লাহ এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বুধবার রাত তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২৫ জনের সশস্ত্র বাহিনী শাড়ির দোকান বরিশাল ফ্যাশন হাউজ এবং দোতলায় দ্যা কিচেন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের তালা ভেঙে মালামাল লুটপাট করে। এ সময় তাদের সাথে একটি ট্রাক ছিলো। লুটপাটকৃত মালামাল ওই ট্রাকে করে নিয়ে যায়।
যখন এ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিলো তখন এলাকাবাসীর ধারণা ছিলো দোকানের মালিক মালামাল নিচ্ছে। এ জন্য তারা সেখানে দেখার জন্য গেলে তাদেরকে অস্ত্রের ভয় দেখানো হয়। তাদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন বৃহস্পতিবার দোকানে গিয়ে দেখতে পাই শাড়ির দোকানের সবগুলো শার্টারের তালা ভাঙা হয়েছে। দোতলায় হোটেলের তালাও ভাঙা।
শাড়ির দোকান থেকে দামি দামি শাড়ি থেকে শুরু করে হাতের কাছে যা পেয়েছে তাই লুটপাট করেছে। এরপর হোটেলের ফ্রিজ থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক্স যত মালামাল ছিলো তাও নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এতে আমার প্রায় ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। লুটপাটকৃত শাড়ির মধ্যে কম দামিয় শাড়ি নগরীর কেডিসি বস্তিতে বিতরণ করা হয়।
বাদী আরো জানান, বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে ও লকডাউন থাকায় কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয় এবং সেই থেকে বেশ কিছুদিন যাবত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে এই লুটপাট চালায়।
এ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিটি কর্পোরেশনের ব্যবহৃত সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বাদী।
এ ব্যাপারে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাদী যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আমি যদি দলবল নিয়ে লুটপাটের তাণ্ডব চালিয়ে থাকি তাহলে তো ওই এলাকার মানুষের চোখে পড়ার কথা।
তিনি বলেন, শহিদ যে ভবনে ব্যবসা করেন সেটি আমার মালিকাধীন। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৫ বছরের চুক্তিনামা রয়েছে সেই চুক্তিনামা শেষ হলে আমি শহিদকে উকিল নোটিস করেছি। এছাড়া তার কাছে আমি প্রতিমাসে ৮০ হাজার টাকা করে ১৪ মাসের ভাড়ার টাকা পাওয়া রয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। তিনি এ সকল টাকা আত্মসাত করার লক্ষেই আমার বিরুদ্ধ মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
এর জবাবে কে.এম শহিদুল্লাহ বলেন, ওই জমি সিটি কর্পোরেশনের সেখানে ভবন করেছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের কাছ থেকে লীজ নিয়েছে তৌহিদুল ইসলাম। তার কাছ থেকে আমি ১০ বছরের চুক্তিনামায় ভাড়া নিয়েছি। এ জন্য এককালীন ১১ লাখ টাকা এবং সেখান ভবন বর্ধিতকরণে খরচ হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। যা লীজকৃত ভবন মালিকের সাথে কথা বলে করা হয়েছে।
এরপর বিভিন্ন সময় তৌহিদুল ইসলামকে হিসাবের জন্য বসতে বলা হলেও সে আমাকে ঘোরাতে থাকে। সে আমার কাছে যা পাবে তার চেয়ে আমি তার কাছে অনেক বেশী পাবো। ওই টাকা না দেয়ার জন্য দলীয় ক্ষমতায় কাজে লাগিয়ে আমার উপর চাপ সৃষ্টি করছে।