টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
পাবনা আটঘরিয়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক বাহাউদ্দিন মাস্টার

পাবনা আটঘরিয়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক বাহাউদ্দিন মাস্টার

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় বিদেশি ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কৃষক বাহার উদ্দিন শেখ । গতানুগতিক ফসল চাষের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে নতুন নতুন ফসল চাষে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার বহাজিপাড়াা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কৃষক বাহার উদ্দিন শেখ ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছেন। পরিচিতি পেয়েছেন সৃজনশীল কৃষক হিসেবে। উৎপাদন যথাযথ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে নতুন নতুন ফসল চাষ করে চলেছেন ।

ফলটি লাভজনক হওয়ায় ড্রাগন চাষ সম্প্রসারণ করেছেন। এখন ছড়িয়ে দিতে চান দেশব্যাপী। চাষি বাহার উদ্দিন ক্রমাগত নতুন নতুন চাষে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি তিনি কৃষকদের পথিকৃত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

কৃষি উদ্যোক্তা বাহার উদ্দিন শেখ বলেন, শিক্ষকতা জীবনে স্বল্প আয়ে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ের লেখা-পড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। প্রথম দিকে ধান, পাট ও গমের মতো পরিচিত ফসল চাষ শুরু করলেও কয়েক বছর পরেই চাষে বৈচিত্য আনি। ধান-পাট বাদ দিয়ে ফল চাষে মনোযোগ দেই। এক সময় টেলিভিশন ও পত্রিকায় ড্রাগন চাষ নিয়ে প্রতিবেদন দেখি ২০১৭ সালে ৬৬ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করি। প্রথম বছরে খুব বেশি লাভ না পেলেও পরের বছর নিজের উৎপাদিত চারা দিয়ে ১১২ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হই। ১১২ শতক জমি থেকে প্রতি বছর খরচ বাদে গড়ে প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে।

বাহার উদ্দিন শেখ আরো বলেন, আমার ছেলে নাজিম উদ্দিন শেখ চাকুরি কারার সুবাদে ঢাকায় থাকেন। সে ফল গবেষনাগারে খবর নিয়ে চারা সংগ্রহ করে ৬৬ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করি। পরবর্তীতে ভালো ফলন পাওয়ায় আরও ৬৬ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করি। এ ফল চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় খুবই কম। সাধারণত গোবর ও মুরগির বিষ্টা প্রয়োগ করা হয়। পাকা ফল ফ্রিজিং বাদেই ১৫ দিন ভালো থাকে। এলাকায় ড্রাগন চাষ ছড়িয়ে দিতে আমি অন্যদের পাঁচ হাজার চারা দিয়েছি।
আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম নামের এক সৌখিন চাষি বলেন, আমি বাহার উদ্দিন মাস্টারের ড্রাগন বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে তারকাছ থেকে ৫ হাজার চারা নিয়ে ৫ বিঘা ড্রাগন ফলের বাগান করেছি। তিনি বলেন, ড্রাগন চাষে প্রথম বছর খরচ একটু বেশি হয়। পরের বছর থেকে খরচ নেই বললেই চলে। এ বছর গাছের পরিচর্যা, সেচ ও সার বাবদ ৮-১০ লক্ষ টাকা ব্যায় হলেও প্রথম বছর খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকা আয় করা যাবে।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোখশানা কামরুন্নাহার বলেন, বাংলাদেশে এ ফলের চাষ এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। আটঘরিয়া উপজেলায় বাহার উদ্দিন মাস্টার নামে একজন চাষি ক্যাকটাস প্রজাতির এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। এই ফলটি লাল, হলুদ, গোলাপিসহ বিভিন্ন রং এর হয় বিধায় রং এর কারনে ফলটি অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।

তিনি আরও জানান, ঢাকাতে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় বাজারেও এ ফল বিক্রি শুরু হয়েছে। এই ফল চাষে চাষিদের হটিকালচার এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ এবং ছাদ বাগানের বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়। উপজেলার চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে আগামী তিন বছরে কমপক্ষে ৮-১০ হেক্টর জমিতে লাভজনক ড্রাগন ফলের চাষ সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা আছে।

 

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital