রেষ্টুরেন্টের বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম জানান যথারীতি শুক্রবার দিবাগত রাতে হোটেলের বেচাকেনা বন্ধ হলে কর্মচারী আতোয়ার রহমান এবং বাবুর্চির সহকারী বাদল রাতে অবস্থান করছিল। পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম এসে তাদের ডাকার জন্য মেইন দরজায় অনেক্ষণ ধরে ধাক্কা দিয়ে কোন সাড়া না পেয়ে মালিককে খবর দেয়। অনেক খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে সাইফু‘ল ইসলাম দরজার বাইরে চাবি পড়ে থাকতে দেখতে পায়। চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে একটি কাপড়ের স্তুপের মধ্যে আতোয়ার রহমানের রক্তাক্ত লাশ হোটেলের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। । কিন্তু তার সাথে অবস্থান করা বাদলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। বেলা দেড়টায় রাজশাহী থেকে সিআইডি’র ক্রাইম সিন-এর ফরেনসিক টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত শুরু করে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে যে, আতোয়ার রহমান (৫০) চাইনিজ রেস্টুরেন্টটি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ২৫ বছর যাবত কাজ করে আসছিলেন। তিনি খর্বাকৃতির এবং হাসিখুশি হওয়ার সুবাদে নওগাঁয় সকলের নিকট খুবই প্রিয় ছিলেন। রেস্টুরেন্টটিতে কাস্টমার আসার সাথে সাথেই- হাঁসি মুখে গিয়ে সালাম দিয়ে আবার কখনোবা সেনা কায়দায় স্যালুট দিয়ে তাদের বরণ করে হোটেলের অভ্যন্তরে নিয়ে যেতেন।
নিহত আতোয়ার রহমানের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানাধীন চক মোহিতুল যোগিরভিটা গ্রামে। তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা গ্রামের বাড়িতেঅবস্থান করতো। আতোয়ার নওগাঁয় একা বসবাস করতেন।
নওগাঁ’র পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়াসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনের সময় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদকে এই হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘একটি খুন হয়েছে। আপনারা যা দেখছেন আমরাও তাই দেখছি। এখন তদন্ত চলছে।’’
নওগা শহরের প্রাণকেন্দ্র, মুক্তির মোড়, এমন জায়গায়- সকলের কাছে জনপ্রিয় একজন মানুষকে কে বা কারা কেন খুন করলো- তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।