টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
রূপগঞ্জে পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী মুড়াপাড়া রাজবাড়ি

রূপগঞ্জে পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী মুড়াপাড়া রাজবাড়ি

নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত মুড়াপাড়া রাজবাড়ি। এই শতবর্ষী রাজবাড়িটি এখন আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র ও সরকারি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। মুড়াপাড়া রাজবাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত রূপগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম একটি পত্নতাত্তিক নিদর্শন ও শতবর্ষী জমিদার বাড়ি। বিভিন্ন সময় এ জমিদার বাড়িটি কয়েকজন জমিদার কর্তৃক সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা থেকে সড়ক পথে এর দুরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। স্থানীয়রা একে মঠেরঘাট জমিদার বাড়ি বলেও অভিহিত করে।

মুড়াপাড়া রাজবাড়িটি ৬২ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। এই জমিদার বাড়িটি তৈরি করেন বাবু রামরতন ব্যানার্জী যিনি এ অঞ্চলে মুড়াপাড়া জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর তার কয়েকজন বংশধর কর্তৃক প্রাসাদটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে জমিদার প্রতাপচন্দ্র ব্যানার্জী এই ভবনের পিছনের অংশ সম্প্রসারণ করেন ও পরিবার নিয়ে এখানেই বসাবাস শুরু করেন। তার পুত্র বিজয় চন্দ্র ব্যানার্জী ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রাসাদের সামনের অংশে একটি ভবন নির্মাণ ও ২টি পুকুর খনন করেন। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে তার দুই পুত্র জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জী ও আশুতোষ চন্দ্র ব্যানার্জী কর্তৃক প্রাসাদের দোতালার কাজ সম্পন্ন হয়।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর জগদীশ চন্দ্র তার পরিবার নিয়ে কলকাতা গমন করেন। এরপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাড়িটি দখল নেয় এবং এখানে হাসপাতাল ও কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এখানে স্কুল ও কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করা হত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ প্রতœতত্ত¡ অধিদপ্তর বাড়িটির দায়িত্ব গ্রহণ করে সেটিকে প্রতœতাত্তি¡ক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে এটি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নামে পরিচিত।

দ্বিতলা এ জমিদার বাড়িটিতে ৯৫টি কক্ষ রয়েছে, রয়েছে সংলগ্ন ২টি পুকুর। বাড়ির সামনে একটি বৃহদাকার পুকুর পেছনভাগে তুলনামূলক ক্ষুদ্রকার আরেকটি পুকুর।। এছাড়াও পুরো জমিদার বাড়িটিতে রয়েছে বেশকিছু নাচঘর, আস্তাবল, মন্দির ও কাচারি ঘর। মন্দিরের ওপরের চূড়াটি প্রায় ৩০ ফুট উঁচু। মূল প্রাসাদে প্রবেশের পথে রয়েছে বেশ বড় একটি ফটক। একটি আম বাগানও আছে জমিদার বাড়ির পাশে। দু’টি পুরনো মঠ রয়েছে প্রধান সড়কের পাশে।

মুড়াপাড়া রাজবাড়ি তথা সরকারি মুড়াপাড়া কলেজটি এখন সঞ্চালনা করছে কলেজের অধক্ষ বাবু সুকুমার রায়, ভারপ্রাপ্ত অধক্ষ মোঃ আল আমিন হোসেন, সরকারি মুড়াপড়া কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তুহিন ইসলাম, জি এস সাদিকুল ইসলাম সজিব, এজিএস আশিকুর রহমান আশিক, সাহিত্য সম্পাদক মনির হোসেন, দপ্তর সম্পাদক রায়হান বিল্লাহ অনিক, ক্রিড়া সম্পাদক মাইনুল ইসলাম ও সমাজ সেব সম্পাদক তানজিল হামিম জয় সহ কলেজের শিক্ষক, নেত্রীবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা।

সরকারি মুড়াপাড়া কলেজের অধক্ষ বাবু সুকুমার রায় বলেন, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটি এখন সরকারি মুড়াপাড়া কলেজ নামে অনেক পরিচিত। বর্তমানে এটি পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তাই আমরা কলেজের শিক্ষক, নেত্রীবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা সবাই একসাথে এই স্থানটির সৌন্দর্য রক্ষার চেষ্টা করছি। এটি যেন চিরকাল এভাবেই একটি প্রচলিত স্থান হিসেবে থাকে। স্থানটি যেন সব সময় পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে আমরা সে ভাবেই রাজবাড়িটি সঞ্চালনা করছি।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital