মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন পিপিএম জানান, মুন্সীগঞ্জে এর আগে আর কোন হত্যাকাণ্ডের এতো দ্রুত চার্জশীট প্রদান করা হয়নি। তিনি জানান, রবিবার মামলাটির চার্জশীট প্রদান করা হয় যার নম্বর ১২৮ ধারা দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার ওসি (অপারেশন) মোঃ আজগর হোসেন।
মাত্র ৭ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য কাঁচি দিয়ে গলা কেটে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছে স্বামী অহিদুল। গত বুধবার গভীর রাতে শ্রীনগর উপজেলার বানিয়াবাড়ি বাঘাডাঙ্গা এলাকার ভ্যান চালক অহিদুল মুন্সী তার স্ত্রী পারভীন বেগমকে সুকৌশলে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে নির্দোশ প্রমাণের জন্য স্ত্রীর সাথে নিজেও অপহৃত হয়েছিলেন বলে নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ পারভীন আক্তারের লাশ উদ্ধার করে এবং বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় তার স্বামী অহিদুল মুন্সীকে আটক করে। মুন্সীগঞ্জ আদালতে অহিদুল মুন্সী তার স্ত্রীকে হত্যা ও নেপথ্যের কারণ বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
তিনি আরো জানান সে নিজে একা একাই প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে নিজের স্ত্রী পারভীন বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করে । গত বুধবার রাতে স্ত্রীকে সুকৌশলে বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে আড়িয়লবিল সংলগ্ন কামলা ডাঙ্গার বিলে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ২:৩৫ মিনিটে স্ত্রী পারভীন বেগমকে কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। লাশ গুম করার লক্ষ্যে বিলের একটি পুকুরে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে হত্যাকারী অহিদুল মুন্সী বাড়িতে এসে নিজ গায়ের জামা কাপড় পাল্টিয়ে এলাকায় বলাবলি করে প্রতিবেশী রাজা মিয়ারা তাকে ও তার স্ত্রীকে তুলে বিলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। সে কোনোমতে পালিয়ে আসেন। পরে খবর পেয়ে শ্রীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পারভীন বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় পাভীন বেগমের ভাই বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তা মামলায় রুপান্তরিত হয়।
শ্রীনগর থানার মামলা নং-৫। আসামির দেয়া তথ্যের ভিক্তিতে বিলের পুকুর থেকে ধারালো কাঁচি, লুকানো জামা কাপড়, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। এবং অতি দ্রুত সকল তথ্য উপাত্ত পেয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে সমর্থ হয়।
অহিদুল মুন্সী ও পারভীন বেগম দম্পতির ৪ জন সন্তান রয়েছে। তারা হলেন, সম্পা (১৬), মিম (৮), জান্নাত (৪) নামে ৩ কন্যা ও ইয়াসিন (১২) নামে ১ পুত্র। তাদের বড় মেয়ে সম্পার ৮ দিন আগে বিয়ে হয়েছে।