টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
শুধু পরীক্ষা নয়, ক্লাসেও ফিরতে চান শিক্ষার্থীরা

শুধু পরীক্ষা নয়, ক্লাসেও ফিরতে চান শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থগিত থাকা পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ইতিমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সশরীরে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থগিত থাকা পরীক্ষা শুরুর জন্য তারিখ দিয়ে রাখা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হলেও বন্ধই থাকছে আবাসিক হল।

পরীক্ষার তারিখ দিয়ে রাখা হয়েছে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে

আগামী ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১০ আগস্ট থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাবির ২০১৯ সালে স্থগিত পরীক্ষা ২০ জুন এবং ২০২০ সালের পরীক্ষা ৪ জুলাই থেকে, যবিপ্রবি এবং নোবিপ্রবি সশরীরে জুলাইয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আগামী শনিবার (১৯ জুন) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, হল-ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে পরীক্ষা আয়োজন বৈষম্যমূলক এবং প্রহসনের সিদ্ধান্ত। তারা বলছেন, সারাদেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে যে আন্দোলন শুরু করেছে তার প্রেক্ষিত্রেই কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৈষম্য দীর্ঘায়িত হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা পর্যন্ত দেশব্যাপী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা তাদের।

‘অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ প্ল্যাটফর্মের প্রধান সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বলেন, গত মে মাসের ২৪ তারিখ মানববন্ধনের মাধ্যমে আমরা সারাদেশে অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানাই। পর্যায়ক্রমে ঢাকার প্রেস ক্লাব, নীলক্ষেত, শাহবাগ, ইউজিসি ভবনের সামনে আন্দোলন কর্মসূচির সাথে মিল রেখে সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় কর্মসূচি পালিত হয়।

মশিউর বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ অনলাইন-অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। আমরা শুধুমাত্র অনলাইন কিংবা অফলাইনে পরীক্ষার জন্য আন্দোলন করিনি। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমাদের এক দফা এক দাবি বিনা শর্তে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

হল-ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে পরীক্ষা চান শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুহম্মদ মুহিউদ্দিন রাহাত বলেন, দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। পরীক্ষা দেওয়া একটি উদ্দেশ্য হলেও তা আমাদের প্রধান লক্ষ্য নয়। হল-ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে কর্তৃপক্ষ এখন যে পরীক্ষা আয়োজন করেছে এটি একটি বৈষম্যমূলক এবং প্রহসনের সিদ্ধান্ত। এখনে শিক্ষার্থীদের চাওয়ার প্রতিফলন হয়নি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা জেরিন জুঁই বলেন, আমাদের অনলাইন ক্লাসের নামে নামসর্বস্ব কিছু রেকর্ড করা ভিডিও দিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়েছে, যা থেকে শিক্ষার্থী কিছু শিখতে পারেনি। অনলাইন ক্লাসের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অসম্ভব। আমরা চাই, খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা যথেষ্ট সচেতন, আমাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার দিকটা আমরা দেখতে পারবো।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফা প্রীতি বলেন, আমরা পরীক্ষা দিতে চেয়েছি। তবে হল ক্যাম্পাস খুলে পরীক্ষা দিতে চেয়েছি। হল ক্যাম্পাস না খুলে পরীক্ষা নিলে লাখ লাখ শিক্ষার্থী এসে থাকবে কোথায়? পরীক্ষাই যদি নেয়া যায় তাহলে হল খুলে দিতে সমস্যা কোথায়?পরীক্ষাতে কি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হবে না? যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা হয় তাহলে ক্যাম্পাস কেনো খোলা যাবে না? ক্যাম্পাসে কি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ আমাদের প্রশাসন?

সরকারি বাংলা কলেজের একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী মুহম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, আমি ৩য় বর্ষের ছাত্র। লকডাউনের আগে আমাদের প্রথমদিকের কিছু ক্লাস হয়েছিলো, কিন্তু সিলেবাস শেষ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করেই নতুন পদ্ধতিতে আমাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়, যেখানে সিলেবাস থাকে পুরো বই অথচ অনলাইন/অফলাইনে যেই অংশ আমাদের পড়ানোই হয়নি।

তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ক্লাস নেওয়া ব্যতীত মানহীন পরীক্ষায় শিক্ষার কোনো লাভ হবে বলে আমি মনে করি না। বরঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান করা যাবে। আর এটা যত দ্রুত করা হবে ততোই মঙ্গল।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী মুহম্মদ মাহদী হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা আজ তাদের মৌলিক অধিকার শিক্ষার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি- বিনা শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তাবটি গ্রহণ করে সরকারের শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষানীতি চালু করা প্রয়োজন।

এর আগে, গত ২৭ মে (বৃহস্পতিবার) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসির সদস্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।বলেন, করোনা পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। এ কারণে ছাত্রছাত্রীদের বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital