চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। চলতি মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এদিন নগরের ২ জন ও উপজেলার ৩ জন মিলে মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৬৭১ জন। এর মধ্যে ৪৬৬ জন নগরের ও ২০৫ জন উপজেলার বাসিন্দা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭৪ জনের। যা শতকরা শনাক্তের হারে প্রায় ২৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের শতকরা হিসাবে চট্টগ্রামে এটাই সর্বোচ্চ। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ১৬০ জন নগরের ও ১১৪ জন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ১৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুন) সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এই দিন ১২টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৯৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭৪ জন। এরমধ্যে নগরে ১৬০ জন ও উপজেলায় ১১৪ জন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ২৩৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৩৬ জন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৩২ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জনের করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৮৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫০ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাব ৬৬ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জন, শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ৯০ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৭ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জন, জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল)৩০ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ১৬ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭ জন এবং পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ জন করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৫৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮ জনের পজিটিভ হয়েছে।
এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪ জনের পরীক্ষায় কারো করোনা শনাক্ত হয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
বর্তমানে নগরের পাশাপাশি উপজেলায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। চিকিৎসকরা বলছেন ভারতীয় ধরনে (ডেল্টা প্রজাতি) চট্টগ্রামে সংক্রমণ হার বাড়ছে। একই সঙ্গে হাসপাতালেও বেড়েছে রোগীর চাপ।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে। যদিও চট্টগ্রামে রাত ৮ টার পর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে গত ২৩ জুন থেকে।