দেশে কঠোর লকডাউন চলছে। এর মধ্যেই রাস্তায় জড়ো হয়ে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নাটকের শুটিং করায় পরিচালকসহ শুটিং ইউনিটের কয়েকজনকে আটক করে খিলগাঁও থানা পুলিশ। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা যায়, কঠোর লকডাউনের মধ্যে খিলগাঁওয়ের সি ব্লকে পরিচালক নাসিরউদ্দিন মাসুদ একটি টিভি নাটকের শুটিং করছিলেন। রাস্তায় শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন অভিনেতা সাব্বির আহমেদ। সেখানে শুটিং ইউনিটের লোকজনদের পাশাপাশি উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। খবর পেয়ে খিলগাঁও থানা পুলিশ পরিচালকসহ শুটিং ইউনিটের ডজনখানেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাদের ছাড়িয়ে আনতে সন্ধ্যায় থানায় যান অভিনেতা-নির্মাতা হাসান জাহাঙ্গীর। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে নাটকের ইনডোরে অংশ নেন স্বাগতা, জামিল আহমেদসহ অনেকে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলম জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খিলগাঁওয়ের সি ব্লকে শুটিংয়ের সময় ভিড় হওয়ায় পরিচালকসহ ইউনিটের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়। শুটিংয়ের আশেপাশে অনেক লোকজন হয়েছিল। তারা শুটিংয়ের অনুমতির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তবে পরিচালক নাসিরউদ্দিন মাসুদ দাবি করেছেন, তাদের শুটিংয়ের অনুমতি ছিল। তার ভাষ্য, ‘আমাদের পারমিশন নেওয়া ছিল। থানায় কথাও বলা ছিল। কিন্তু সেটা ডিসি সাহেবের নজরে ছিল না। সে কারণে থানায় গিয়ে লিখিত দিয়ে চলে এসেছি।’
এদিকে, হাসান জাহাঙ্গীর জানান, নাসির উদ্দিন মাসুদের ওই নাটকের শুটিংয়ে ১২ জনের মত কলাকুশলী ছিলেন। ঘটনা জানতে পেলে তিনি সন্ধ্যায় থানায় যান। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতায় মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘সংগঠনের তরফ থেকে শুটিং করতে আমরা লিখিতভাবে নিষেধ করেছি। যাদের নাটকের জন্য টিভি থেকে অগ্রিম সিডিউল নেওয়া আছে, তারা খুবই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইনহাউজ শুটিং করতে পারবেন। কিন্তু রাস্তায় বা খোলা জায়গায় করা যাবে না। কিন্তু এ শুটিং ইউনিট সেটা মানেনি। ঘটনার পর মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। এবং পরিচালকসহ অন্যদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি।’
বিষয়টি নিয়ে ছোট পর্দার ১৪ সংগঠনের মোর্চা এফটিপিও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাস্তা-ঘাটে শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নির্মাতা-কলাকুশলীদের সতর্ক করেছেন। তা না হলে শুটিং বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং হাউজের ভেতরে, টেলিভিশনের ছাড়পত্র নিয়ে নাটকের শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তবে কেউ কেউ বিধি ভেঙে লকডাউনের মধ্যে রাস্তা-ঘাটেও শুটিং করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।