টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
দিলীপ কুমারের অটোগ্রাফ পেতে অমিতাভের লেগেছিলো ৪৬ বছর

দিলীপ কুমারের অটোগ্রাফ পেতে অমিতাভের লেগেছিলো ৪৬ বছর

বলিউডের কিংবদন্তি তারকা দিলীপ কুমার তার ছয় দশকের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন অর্ধশতাধিক সিনেমা। যিনি অনেক তারকারও তারকা। অসুস্থ হয়ে আজ সকালেই না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

অভিনয় জীবনে ট্রাজেডির রাজা হলেও দিলীপ কুমারের ব্যক্তিগত জীবন ছিলো ভালোবাসার রঙে রঙিন। খ্যাতির শিখরে থাকা এই অভিনেতার সঙ্গে ঘন ঘনই তৎকালীন সুন্দরী নায়িকাদের নাম জড়িয়েছে অনায়াসেই। কামিনী কৌশল, মধুবালা, বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও দিলীপ কুমারের সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী সায়রা বানুর। ১৯৬৬ সালে তাদের যখন বিয়ে হয়, দিলীপ কুমার ৪৪, সায়রা বানু ২২ বছরের। জীবনের নানা ভাঙাগড়ায় এই সম্পর্ক ছিল অটুট। দীর্ঘজীবী দিলীপ কুমারকে শেষ বয়সে ভালবাসা ও যত্নে আগলে রেখেছেন সায়রা বানু। এক সময় আসমার সঙ্গে দিলীপ কুমারের দ্বিতীয় বিবাহ হলেও সে বিবাহ দ্রুত বিচ্ছেদে পরিণত হয়। অদ্ভুত ভালবাসার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে সায়রা বানুই তার সঙ্গে থেকে যান শেষ পর্যন্ত।

এই মহাতারকার পরের প্রজন্মের মহাতারকা অমিতাভ বচ্চন একটি স্মৃতিচারণায় জানান, দিলীপ কুমারের অটোগ্রাফ পেতে তার ৪৬ বছর লেগেছে। প্রথম বার মা-বাবার সঙ্গে গিয়েছিলেন দক্ষিণ মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে, যেখানে দিলীপ কুমার সবান্ধবে উপস্থিত। নায়ককে ঘিরে ভিড়ের কারণে তিনি সফল হননি সেদিন। কিছুকাল পরে আরেকটি সুযোগ আসে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু একটা পার্টি দিয়েছিলেন। দিলীপ কুমার, দেব আনন্দ, রাজ কাপুর হাজির। কিন্তু সেই পার্টিতেও অমিতাভ প্রিয় তারকার অটোগ্রাফ নিতে পারেননি।

এমনকী ১৯৮২ সালে ‘শক্তি’ ছবিতে দিলীপ কুমারের সঙ্গে কাজ করলেও অমিতাভ তার অটোগ্রাফ সংগ্রহে ব্যর্থ হন। অবশেষে তার স্বপ্ন সত্যি হয় ২০০৫ সালে। রানি মুখার্জির সঙ্গে ‘ব্ল্যাক’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ। রানির আমন্ত্রণে স্ত্রী সায়রা বানুকে নিয়ে ছবি দেখতে এসেছিলেন দিলীপ কুমার। ছবি দেখে আপ্লুত দিলীপ কুমার অমিতাভকে একটা দীর্ঘ চিঠি লেখেন। তাতে অনেক প্রশংসাবাক্য থাকলেও চিঠির শেষে দিলীপ কুমারের সই দেখেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান অমিতাভ বচ্চন। দিলীপ কুমার ছিলেন নায়কদের নায়ক।

দিলীপ কুমারের আসল নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান। কর্মজীবনের শুরুতে দিলীপ কুমার ছিলেন ক্যান্টিন মালিক, পাশাপাশি শুকনো ফল সরবরাহকারী। ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ। ১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সালে যথাক্রমে ‘জুগনু’ ও ‘শহিদ’ সিনেমা বাণিজ্যসফল হওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাননি। ১৯৭৬ পর্যন্ত চুটিয়ে অভিনয় করেন। কয়েক বছর বিরতির পর আবার পুরোদমে। ১৯৯৮ সালে তাঁর শেষ ছবি ‘কিলা’।

দিলীপ কুমার অভিনীত অর্ধশতাধিক ছবির কয়েকটি— ‘শবনম’, ‘আন্দাজ’, ‘বাবুল’, ‘দিদার’, ‘অমর’, ‘দেবদাস’, ‘মধুমতি’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘গঙ্গা যমুনা’, ‘রাম অর শ্যাম’।

দিলীপ কুমারের আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ ‘দ্য সাবস্ট্যান্স অ্যান্ড দ্য শ্যাডো’ (অনুলেখক উদয় তারা নায়ার) এক আশ্চর্য জীবনের আলেখ্য।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে লাখো মানুষের মন যেমন জয় করেছেন, তেমনই পুরস্কার পেয়েছেন অগণিত। হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অভিনেতা ‘ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার’ পেয়েছেন আট বার। ১৯৯৩ সালে সম্মানিত হয়েছেন ‘ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা য়। ১৯৯৪ সালে পেয়েছেন ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’। ভারত সরকার তাঁকে ১৯৯১ সালে ‘পদ্মভূষণ’ এবং ২০১৫ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত করে।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital