প্রায় তিন বছর পূর্বে সড়ক দূর্ঘটনায় একটি পা সম্পূর্ণ রূপে নষ্ট হয়ে যায় পাবনা চাটমোহরের ছাইকোলা গ্রামের সবুজ পাড়ার জাহাঙ্গীর আলম (৪২) এর। পেশায় তিনি একজন কৃষি শ্রমিক ছিলেন। ঈশ্বরদীর অরণকোলা হাট থেকে গরু কিনে গরু বাহী নসিমন গাড়িযোগে বাড়ি ফেরার সময় হাটের অদূরেই গাড়িটি উল্টে একাট গর্তে পরে যায় । নিচে চাপা পরেন জাহাঙ্গীর। কোন রকমে প্রাণে বাঁচলেও তার একটি পা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায়। প্রায় ছয় ইঞ্চি হাড় বেড়িয়ে পরে পা থেকে। এলাকাবাসী ও স্বজনরা ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তাকে। সেখানে চিকিৎসায় কোন উন্নতি না হলেও খরচ হয়ে যায় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকেন তিনি। পায়ে লম্বা লোহার রড লাগিয়ে দেয়া হয়। এতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়ে যায় তার। কিন্তু পা সারে না।
কিছু দিন পর সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি হন তিনি। এনাম মেডিকেলের অপারেশন করা হয় তার পায়ের। পায়ে রিং লাগানো হয়। আশা করেছিলেন ভাল হয়ে যাবেন। কিন্তু সেবার ও কোন উন্নতি হলো না। এনাম মেডিকেলে চিকিৎসায় প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়ে যায় তার। ২০১৯ সালে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১৮ দিন চিকিৎসার পর তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। বাড়িতে থাকার সময় পায়ের উন্নতি হয় না। কিছু দিন পর থেকে আবার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। করোনা সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় প্রায় এক বছর ঘুরেও পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সূযোগ পান না তিনি। অবশেষে গত ২৭ জানুয়ারী পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সূযোগ পান। প্রায় চার মাস চিকিৎসাধীন থাকেন তিনি। এসময়ে তার পায়ের ইলিজারক রিং অপারেশন করা হয়। গত ২০ মে তারিখে ফের তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময়ে তার
প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সময় ১৫ দিন পর আরেকটি অপারেশন করতে বলা হয়।
তার পায়ের ৬ ইঞ্চি হাড় কেটে ফেলা হয়েছে। দীর্ঘ চিকিৎসাকালীন সময়ে হাড় ২ ইঞ্চি বৃদ্ধি পেলেও এখনও ৪ ইঞ্চি হাড় নেই। আবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে তার। ধারণা করা হচ্ছে চিকিৎসায় আরো অন্তত দুই-তিন লাখ টাকার প্রয়োজন। কত দিন হাসপাতালে থাকতে হবে জানা নেই তার।
জাহাঙ্গীর আলমের পিতা আফসার সরদার প্রায় মাস ছয়েক আগে মারা গেছেন। জীবিতাবস্থায় সাধ্যমত সন্তানের চিকিৎসার খরচ জুগিয়েছেন। তাদের ৪ ভাইয়ের পৃথক সংসার। সামান্য আবাদী জমি ছাড়াও বাড়ির ৭ শতাংশ জমি বিক্রি করে এতদিন চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন। এখন ২ শতক বসত বাড়ি ছাড়া বিক্রি করার মতো আর কোন সম্পদ, জমি নেই তার। অর্থাভাবে তাই চিকিৎসাও বন্ধ। বাবার পা ভাঙার পর ১১ বছর বয়সী কিশোর ছেলে জিয়াউর রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে শুরু করে। প্রতিদিন অনেক টাকার ওষুধ কিনতে হচ্ছে জাহাঙ্গীরকে। এছাড়া চাল-ডালসহ সংসারের অন্যান্য খরচ তো রয়েছেই।
এমতাবস্থায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহায়তায় চিকিৎসা পেলে ভাল হয়ে যেতে পারেন জাহাঙ্গীর আলম। ভাল হয়ে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে চান তিনি। এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে চিকিৎসা সহায়তার আবেদন জানান। তিনি সমাজের বিত্তবানদের নিকটও সহযোগিতাও কামনা করেছেন। বিকাশ নং-০১৭৪৬ ৬৪১৩০৬।