টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল সংকটেও খালি পড়ে আছে আইসিইউ

ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল সংকটেও খালি পড়ে আছে আইসিইউ

চারদিকে হাহাকার, আইসিইউ, এইচডিইউ বেড নেই। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য মিলছে না আইসিইউ ও এইচডিইউ বেড। কিন্তু খোদ রাজধানীর ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে স্থাপন করা পাঁচটি আইসিইউ ও ১৫টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) বেড অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জনবলের অভাবে এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

হাসপাতালটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) দাবি করছে, তারা বারবার চিঠি লিখলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সাড়া মিলছে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগেও হাসপাতালটিতে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য জনবল দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা ডাক্তারদের অন্য কাজে ব্যবহার করেছে। কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়নি। এখন যদি কোভিড রোগী ভর্তি করে, তবেই জনবল দেওয়া হবে।

পুরান ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজের পাশেই সুপরিসর ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের অবস্থান। গত বছর করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সিটি করপোরেশন এটিকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা শুরু করে। ১৫০ শয্যার হাসপাতালটির ১০০ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। হাসপাতালের অন্য চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখা হয়। পরে করোনার ব্যাপকতা কমলে আগের অবস্থায় ফিরে যায় জেনারেল হাসপাতাল। এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালগুলোয় হাহাকার। কিন্তু কোভিড ইউনিট চালু করা হচ্ছে না ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে। যদিও হাসপাতালটিতে কোভিড রোগীদের জন্য পাঁচটি আইসিইউ বেড, ১৫টি এইচডিইউ বেড ও পাঁচটি ভেন্টিলেটর রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীর ১৬টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে সাতটিতে অল্পসংখ্যক আইসিইউ বেড খালি রয়েছে। এর মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে দুটি, ২৫০ শয্যা শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে দুটি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে তিনটি, ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতালে ১২টি, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে পাঁচটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ে একটি ও ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ৫৩টি আইসিইউ বেড খালি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে হারে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে করোনা রোগীরা রাজধানীর হাসপাতালে ভিড় করছেন, তাতে অতিদ্রুতই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে। কেবল ডিএনসিসি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালেই ঢাকার বাইরে থেকে যেসব রোগী আসছেন, তাদের ৫০ শতাংশকে আইসিইউ সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। বাকিদের এইচডিইউয়ে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে সম্পূর্ণ প্রস্তুত পাঁচটি আইসিইউ ও ১৫টি এইচডিইউ বেড দ্রুত চালু করা উচিত বলে মনে করছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেন, কোভিড ইউনিট চালুর বিষয়ে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি। বেশ কয়েকবার জনবল চেয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা জনবল দিচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহেও মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। হাসপাতালটিকে পুনরায় করোনা ডেডিকেটেড বানাতে ১৪ জন ডাক্তার ও ১০ জন নার্স দেওয়ার আবেদন করেছি। এ ছাড়া কিছু টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনারের চাহিদাও দেওয়া হয়েছে। এ জনবল দিলেই হাসপাতালটি চালু করতে পারব।

ডা. প্রকাশ বলেন, গত বছর যেখানে চাহিদার আগেই আমাদের ডেকে ডাক্তার-নার্স দেওয়া হয়েছে, সেখানে এ বছর চাহিদা দেওয়ার পরও পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গত বছরের ৭২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। সেই টাকাও পরিশোধ করছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমরা চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ বলেন, গত মার্চে সরকারের নির্দেশনা পেয়ে করোনা চিকিৎসা চালু করতে আমরা কিছু প্রস্তুতি নিয়েছি। ১৫টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সংগ্রহ করেছি। ১৫টি বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযুক্ত করেছি। পাঁচটি আইসিইউ বেড প্রস্তুত করেছি। এখন সমস্যা হলো জনবল। আমরা জনবল চেয়ে এই তিন মাসে বহু চিঠিপত্র লিখেছি। জনবল দিলেই চালু করতে পারব। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে জনবল রয়েছে, তা দিয়ে কোভিড হাসপাতাল চালানো সম্ভব হবে না। এখানের কেউ আইসিইউ চালাতে পারবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, তাদের ওখানে সাত মাস জনবল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তাদের দিয়ে আউটডোরে রোগী দেখিয়েছে। এখন যেহেতু ক্রাইসিস, বিভিন্ন জায়গা থেকে জনবল এনে দিয়েছিলাম। সেগুলো আমরা আবার সেসব জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছি। বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা থেকে তাদের এনেছিলাম। জনবল তো এমন না যে চাইলেই পাওয়া যাবে। এখন যদি তারা আবার কোভিড রোগী ভর্তি করে, তবে জনবল দেওয়া হবে। এটি নতুন করে বলার কিছু নেই।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital