টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে নানামুখী প্রতিক্রিয়া

লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে নানামুখী প্রতিক্রিয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন ২৪০ এর উপরে লোক মারা যাচ্ছে। এই অবস্থায় বুধবার থেকে গণপরিবহন, দোকান-পাট, শপিংমল, অফিস-আদালত পুরোদমে চালু হয়ে গেলে ভাইরাসের লাগাম ধরে রাখা যাবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৯ দিনে মারা গেছেন দুই হাজার ২১২ জন। এ সময় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ পনের হাজার ৬৭৪ জন। উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত চার হাজার ৪৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক বিজ্ঞানী ডা: মোজাহেরুল হক মনে করেন, লকডাউন শিথিল বা প্রত্যাহার ছাড়া সরকারের সামনে আর কোনো বিকল্প নাই। কারণ তারা লকডাউন ব্যবস্থা সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হয়েছে। লক্ষ্য ছিল সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা তারা পারেনি। এর কারণ হচ্ছে, সঠিক পরিকল্পনার অভাব, সক্ষমতার অভাব। তিনি মনে করেন, সংক্রমণ আরো বাড়বে অন্তত ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত। গণটিকাদান কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা গেলে সেটা কমে আসবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ডা: নজরুল ইসলাম বলেছেন, সংক্রমণ কমলেও মৃত্যুহার বাড়ছে। এর পেছনের কারণ হচ্ছে, হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা। সরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালের চিত্র আমরা দেখছি। মানুষ হাসপাতালে যাচ্ছে, কিন্তু ভর্তি হতে পারছে না। বাইরে এম্বুলেন্সে মানুষ মারা যাচ্ছে। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে। এই অবস্থায় বিধি-নিষেধ শিথিল হলে কি হবে জানি না। তবে দুস্থ, অসহায় মানুষ অন্তত কাজ করে খেতে পারবে। তিনি অর্ধেক গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তার মতে, সরকারের উচিৎ সব গণপরিবহন চালু করা এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করা।

সোমবার মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অনেক কিছুই স্বাভাবিক হবে, কিন্তু বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনসমাবেশ ও পর্যটন কেন্দ্র। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সরকার এখনো অনড়। তাদের কথা, পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই এখন খোলা যাবে না।

ইউনেস্কো ও ইউনিসেফ একাধিকবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তাগিদ দিয়েছে। বলেছে, দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিদারুণ হতাশা বিরাজ করছে। এর ফলে তরুণ জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতি হবে শেখার। দেখা দেবে মানসিক সঙ্কট। সহিংসতাও বাড়বে। হতাশায় অনেক দেশে শিক্ষার্থীরা আত্মহননের পথও বেছে নিচ্ছে।

বাংলাদেশে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। ২৫ বছরের নিচে টিকা নয়। সরকারি এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারো হতাশা তৈরি হয়েছে। ইউনেস্কো বলেছে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর টিকা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করা যায় না। গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনেকটা অনিশ্চিত। বিশ্বের ১৪টি দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাইরাসের শুরু থেকেই এ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

সর্বশেষ সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, গণপরিবহন আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে চলবে। তবে অর্ধেক বাস চলবে। এ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। পরিবহন মালিকরা অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সব বাস নামাতে চান রাস্তায়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এখনই সব বাস চালানোর পক্ষে নন। তিনি বলেছেন, চাপ কমাতেই অর্ধেক বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি রমেশ চন্দ্র ঘোষ সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি করেছেন। বলেছেন, এই সিদ্ধান্তটি বিচক্ষণতার সঙ্গে নেয়া হয়নি।
সূত্র : ভয়েচ অফ আমেরিকা

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital