টিভি ব্রেকিংঃ
ঝিনুক টিভির পক্ষথেকে সকল দর্শকদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঝিনুক টিভি আসছে নতুন নতুন সব আয়োজন নিয়ে। পাশেই থাকুন
একটি চাঞ্চল্যকর নির্মম হত্যা কান্ডের হত্যা রহস্য উদঘাটন পূর্বক হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে ও সি নির্মল চন্দ্র দেব

একটি চাঞ্চল্যকর নির্মম হত্যা কান্ডের হত্যা রহস্য উদঘাটন পূর্বক হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে ও সি নির্মল চন্দ্র দেব

মধ্যনগর থানাধীন ফারুকনগর গ্রামের জনৈক সুভাষ চন্দ্র সরকার (৬৩) পিতা- মৃত সুধীর চন্দ্র সরকার বিগত প্রায় এক বছর যাবৎ অনেকটা অস্বাভাবিক জীবনাচরণ করতেন। কোন কাজকর্ম করতেন না, এমনকি কারও সাথে প্রয়োজন ছাড়া কোন কথাও বলতেন না।
এই সুভাষ চন্দ্র সরকারকে মৃত অবস্থায় তার পা রশি দিয়ে বাঁধা, গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় বসত বাড়ির পূর্ব পাশে স্থানীয় মনাই নদীর পাড় সংলগ্ন পানিতে ভাসমান অবস্থায় পেয়ে গত ১৮/৮/২১ ইং দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৯/৮/২১ ইং রাত অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় তার ছেলে সুজিত সরকার (৩২), লোক মারফত থানায় সংবাদ প্রদান করেন।মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নির্মল চন্দ্র দেব সংবাদ পাওয়া মাত্রই উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করে এবং সংগীয় অফিসার ফোর্সদের সমন্বয়ে মধ্যনগর থানার একটি চৌকস পুলিশ দল নিয়ে নৌকা যোগে দ্রুত ফারুকনগরের উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়। এবং রাত ০২.৩০ ঘটিকার মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ভালভাবে পর্যবেক্ষণ শেষে মৃতের স্ত্রী সন্তান সহ প্রতিবেশীদের পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে ধর্মপাশা সার্কেল অফিসার মহোদয় ঘটনাস্থলে এসে পড়লে সার্কেলের নির্দেশনায় সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত সহ সার্বিক আইনী কার্যক্রম শুরু করেন। সকলেই ধারনা করে এটি একটি হত্যামূলক ঘটনা।

আমাদের তদন্তটিম মৃতের পরিবারের লোকজন, প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে পর্যায়ক্রমে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং বিরতিহীন ভাবে চলতে থাকে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু তারা সকল প্রকার সন্দেহের উর্ধ্বে থেকে নিজেদের বক্তব্য প্রদান করতে থাকে।

মৃতের মেয়ে নিভা রানী তালুকদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে মধ্যনগর থানার মামলা নং ০১ তারিখ- ১৯/০৮/২০২১ ইং ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

মধ্যনগর থানার চৌকস তদন্তটিম সাময়িক বিভ্রান্ত হলেও হাল ছেড়ে দেয়নি। বিভিন্ন কৌশলে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে জিজ্ঞাসাবাদ। একপর্যায়ে তুলনামূলকভাবে বয়স্ক এবং শারীরিক ভাবে কিছুটা দুর্বল একজন সন্দেহভাজন, সুভাষ চন্দ্র সরকারের হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করলেও অন্যান্যরা তা সম্পূর্ণরুপে অস্বীকার করে। একটু একটু করে প্রকাশ হতে থাকে হত্যাকান্ডের মূল কারণ তথা হত্যাকারীদের মোটিভ।

সুভাষ চন্দ্র সরকার জীবিত অবস্থায় একজন বিকৃত মানষিক অবস্থা সম্পন্ন নারী লোভী ব্যক্তি ছিলেন। তার বিকৃত কাম লালসা চরিতার্থ করার জন্য তিনি অত্যন্ত নিকটাত্মীয় নারী সহ প্রতিবেশী অনেক নারীকেই অগোচরে নির্যাতনের জন্য ভয়ংকর রুপ ধারন করতেন। ভুক্তভোগী নারীরা ভয়ে প্রতিবাদ করার তেমন সাহস পেতেন না। পরিবারের লোকজন অনেক নিষেধ বাধা করলেও তা অগ্রাহ্য করে ৬৩ বছর বয়সেও শক্ত শারিরীক গড়নের সুভাষ চন্দ্র সরকার দিন দিন আরও বিকৃত হতে চলেছিলেন। মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বেও সুভাষ চন্দ্র সরকার তার এক নিকটাত্মীয় নারীকে অসৎ উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেছিলেন মর্মে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ভুক্তভোগী অধিকাংশই নিকটাত্মীয় থাকায় তার এই ভয়ংকর বিকৃত চরিত্রের বিরুদ্ধে কেহই বড় পর্যায়ে তেমন অভিযোগ করতেন না।

মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের পর তদন্তটিমের বিরামহীন  কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সকল সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে এবং কেন কিভাবে হত্যাকান্ড সংঘটিত করে তার লোমহর্ষক বর্ননা দেয়।

মৃতের স্ত্রী আরতী বালা সরকার (৫৩), ছেলে সুজিত সরকার (৩২) এবং ছেলে বৌ খেলা রানী সরকার (২৭)
কোন ভাবেই সুভাষ চন্দ্র সরকারকে নিবৃত করতে না পেরে অসহ্য হয়ে গত ১৮/৮/২১ ইং তারিখ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মর্মে জানান। পরিকল্পনা মোতাবেক  রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় (১৯/৮/২১ ইং) গোয়াল ঘর হতে সুতার তৈরি রশি নিয়ে ঘটনাস্থল নদীরপাড়ে বাধা নিজেদের ইঞ্জিন নৌকায় ঘুমন্ত সুভাষ চন্দ্র সরকারকে রশি দিয়ে পা বেঁধে গলায় রশি প্যাঁছাইয়া শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য নদীতে ফেলে দেয় তার স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বৌ !!

তিনজন অপরাধীই বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। অপরাধ কখনো গোপন থাকেনা এবং যেকোন ভাবেই  অপরাধীকে তার প্রাপ্য সাজা ভোগ করতে হয়।

তদন্তটিমকে সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন সুনামগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মিজানুর রহমান বিপিএম মহোদয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সার্বিক নির্দেশনা ও তদন্ত তদারকি করেন অতিঃ পুলিশ সুপার (ক্রাইম) জনাব মোঃ আবু সাঈদ ও ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (অতিঃ পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব সুজন চন্দ্র সরকার গন।

শেয়ার করুনঃ

Comments are closed.

© All rights reserved © 2020 | jhenuktv.com
Developed BY POS Digital