টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের উচ্চ বিক্রয় মূল্য পেয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত স্থানীয় পাট চাষীরা। একই সাথে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে পাটের ব্যাপক চাষের সাথে ফলন ভালো পেয়েছে কৃষকেরা।
বর্তমানে বন্যার পানিতে পুরো উপজেলার পাট ক্ষেত ডুবু ডুবু থাকায় সর্বত্র পাট কাটা, আঁশ ছাড়ানো, জাগ দেওয়া থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছে পাট চাষিরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২,১০০ থেকে ২,৭০০ টাকা পর্যন্ত। কৃষকরা এর আগে কখনও মৌসুমে এত দামে পাট বিক্রি করতে পারেননি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
উপজেলার, গয়হাটা পূর্ব পাড়া গ্রামের পাট চাষি সানি মিয়া বলেন, এ বছর চার বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। তার ভাষ্যমতে, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পানি জমে থাকায় অনেক পাট নষ্ট হলেও ফলন ভালো হওয়ায় ক্ষতি হয়নি এবং দাম ভালো পেয়েছি। আমি ২,৭০০ টাকা মণ দরে পাট আগেই বিক্রি করে দিয়েছি। কথা হয় ধুবড়িয়া সেনমাইঝাইল গ্রামের কৃষক মোঃ লালন মিয়ার সাথে, তিনি জানায়, দুই বিঘা জমিতে তিনি পাট চাষ করেছেন এবং ২,৪০০ হতে ২,৭০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেছেন। ভাড়রা ইউনিয়নের পাট ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন আপন বলেন, গত বছর এই সময় পাটের দাম ছিল ১২০০ হতে ১৫০০ টাকা মণ। এখন মান ভেদে ২,৭০০ টাকা থেকে ৩,০০০ টাকা মণ দাম যাচ্ছে। গতবারের থেকে এবার অধিক মূল্যে পাট কিনতে হচ্ছে আমাদের।
নাগরপুর, মোকনা,পাকুটিয়া,গয়হাটা ও ধুবড়িয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা পাট কাটা ও পাট জাগ দিচ্ছেন। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও বন্যা পানি থাকায় তারা পাট ক্ষেতেই জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোর কাজ সারছেন। কৃষকেরা বলেন, পাটে গুন ও রূপ মূলত পানির উপর নির্ভরশীল। পাট কাটার সময় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় পাট জাগ দিতে তেমন সমস্যা হয়নি।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি-সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাট চাষে পুরো জেলায় যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো তার থেকে পাট উৎপাদন এবারের মৌসুমে বেশি হয়েছে। শুধুমাত্র নাগরপুর উপজেলাতেই এবার ১ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, এবার নাগরপুরে পাটের ভালো ফলন হয়েছে সেই সাথে কৃষক ভালো দাম পাচ্ছে এবং পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে।
নাগরপুরের ন্যায় পুরো দেশে কৃষকের ঘরে ঘরে পাটের স্বর্ণযুগ যেনো ফিরে এসেছে,বাজারে পাট বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন কৃষকরা। গ্রামের হাটবাজারে প্রচুর পাট উঠছে। আমাদের গৌরবের কৃষি পণ্য নিয়ে দেশে কৃষকের মুখে হাসি বিদ্যমান থাকুক এটিই কাম্য।