স্বামীর মৃত্যুর পর পুরতন প্রেমিকের সাথে বেড়াতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নিহত হয়েছেন চার সন্তানের জননী জেসমিন আক্তার (৩০)। এ ঘটনায় প্রেমিক মুরসালিন ওরফে জোবাইদ ওরফে জোবাইরের (৩২) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জোবাইদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে নিহতের বাবা বাদী হয়ে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন। জেসমিন আক্তার কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় মানিকদি (পুরানগাঁও) গ্রামের কাজল মিয়ার মেয়ে। প্রেমিক জোবাইদ একই উপজেলায় টান কৃষ্ণনগর গ্রামের আ. রাজ্জাকের ছেলে এবং তিনি ৩ সন্তানের জনক।
জানা যায়, বিয়ের আগে বিভিন্ন সময় জেসমিন আক্তারকে কু-প্রস্তাব ও বিয়ের প্রস্তাব দেয় জোবাইদ। তার আচার-আচারণ খারাপ থাকায় জেসমিনকে অন্যত্র বিয়ে দেন বাবা। গত দুই বছর আগে চার সন্তান রেখে স্বামী মাহফুজ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর থেকে জেসমিন বাবার বাড়িতে থাকতেন। জোবাইদের স্ত্রী ও সন্তান থাকা সত্ত্বেও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে জেসমিনের সঙ্গে আলাপ আলাপন করতে থাকে। পুনরায় বিয়ের প্রস্তাবও দেয়। জেসমিনের বাবা বিয়েতে অসম্মতি পোষণ করেন।
পুলিশের হাতে আটক প্রেমিক জোবাইদ জানান, বাড়ির পাশে জেসমিনের এক ফুফুর বাড়ি থাকায় কিশোর বয়সে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসময় পারিবারিক সম্মতিতে জেসমিনের বিয়ে হয় মাহফুজের সাথে। মাহফুজ ও জোবাইদ মিয়া ভৈরব বাজারে একই মার্কেটে জুতার ব্যবসা করতেন। মাহফুজ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে তাদের প্রেমের সম্পর্ক আরো গভীর হয়।
তিনি আরও জানান, গত সোমবার প্রমোদ ভ্রমণের উদ্দেশে ভৈরব থেকে তারা দুজনে মোটরবাইকে করে সুনামগঞ্জের তাহেরপুর শিমুল বাগানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি সড়কের কেন্দুয়া পৌর শহরের স্বল্প কমলপুর এলাকায় ব্রিজে ওঠার সময় মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন জেসমিন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেসমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে জেসমিনের বাবার অভিযোগ, গত সোমবার জেসমিনকে মোটরসাইকেলযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানাধীন স্বল্প কমলপুর ব্রিজে নিয়ে যান জোবাইদ। সেখানে নিয়ে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের সহায়তায় মাথায় ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে তার মেয়েকে ব্রিজের ওপরে ফেলে রাখা হয়।
কেন্দুয়া থানা ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে নিহতের বাবা হত্যা মামলা দায়ের করলে জোবাইদকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।