এইতো ৯০ দশকের শেষ দিকেও ঢেঁকি শব্দে মুখরিত থাকতো নাগরপুর উপজেলার প্রায় সব এলাকায়। একসময় ঢেঁকি ছিল নাগরপুর জনপদে চাল ও চালের গুঁড়া বা আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম।
অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে কৃষক ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে কৃষাণীদের ঘরে ধান থেকে নতুন চাল ও চালের গুঁড়া করার ধুম পড়ে যেত। সে চাল দিয়ে পিঠা-পুলি, ফিরনি, পায়েস তৈরি করা হতো। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি আগের মতো আর চোখে পড়ে না এই আধুনিক যুগে।
পুরো উপজেলা ঘুরে এসে দেখা যায় ঢেঁকির ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ বা চেষ্টা করার কেউ নেই! তেল বা বিদ্যুৎ চালিত মেশিন দিয়ে ধান ও চাল ভাঙ্গানোর কারণে ঢেঁকি আজ কদরহীন। নাগরপুর উপজেলার গ্রাম গুলোতে ঘুরেও এখন ঢেঁকির দেখা মেলা কষ্টকর।
ঢেঁকি সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকেই জানান, আগে প্রায় সবার বাড়িতে ঢেঁকি ছিল। সেই ঢেঁকিছাঁটা চাল ও চালের পিঠার গন্ধ এখন আর নেই।
উপজেলার ধুবড়িয়া ইউনিয়নের, সেনমাইঝাইল এলাকায় অনেক খুঁজে দেখা মিলে এক ঢেঁকি বাড়ির, উক্ত বাড়ির শুচিএা সরকার জানায়, ঢেঁকিতে চাল গুঁড়া করতে অনেক আনন্দ লাগে এবং অনেকটা স্মৃতি ধরে রাখতেই এখনো বাড়িতে ঢেঁকি রেখেছি। প্রায় ২০ বছর ধরে এই ঢেঁকিতে ধান ও আঁটা ভাঙ্গানোর কাজ করছি। এসময়ের মেয়েরা ঢেঁকির সাথে পরিচিত নয় এবং কিভাবে ঢেঁকিতে কাজ করে বলতে পারবে না।
ঢেঁকি বিলুপ্তির বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান বলেন, ঢেঁকি আজ গ্রাম থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে কিন্তু ব্যক্তি উদ্দ্যোগে কিছু ঢেঁকি সংরক্ষণ হয় বলে কিছু ঢেঁকি আজও দেখা যায়। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে ভাবছি কিভাবে ঐতিহ্যবাহী এই ঢেঁকি সংরক্ষণ করা যায়।