স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, এই মাসে (নভেম্বর) ৫৬ হাজার ৫৬৬ জন রোগী করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে। আর ওই সময়ে দেশে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে নভেম্বর মাসে সর্বশেষ পরীক্ষায় গত ৩০ তারিখে করোনা ভাইরাসে ১২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই দিন দেশে ২ হাজার ৫২৫ জনের শরীরে নতুন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যা গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলো। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিলো। ওইদিন ২ হাজার ৫৮২ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ৩০ নভেম্বর ২ হাজার ৫২৫ জনকে নিয়ে দেশে মোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩২ জন রোগী শনাক্ত হয়। আর এই ভাইরাসে ওইদিন ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে নভেম্বর শেষে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো ৬ হাজার ৬৪৪ জনে।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। আর প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অন্যদিকে দেশে গত মাসে সড়ক ও মহাসড়কে ৪৪৩টি দুর্ঘটনা হয়। এসব দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত এবং ৭৪১ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, নভেম্বরে রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে, নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় তিন জন নিহত ও ২০ জন আহত এবং চার জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। এই মাসে সব মিলে (সড়ক, রেল ও নৌ-পথ) ৪৪৯টি দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত এবং ৭৪১ জন আহত হয়।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নভেম্বরের একদিনে (১৯ তারিখ) সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এইদিনে ২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হন। আর একদিনে (২৩ তারিখ) সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এইদিনে ৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় আট জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হন।
প্রতিবেদনটি বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২০৩ জন চালক, ১৫৫ জন পথচারী, ৯৪ জন নারী, ৪৯ জন শিশু, ৪২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ১৬ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য (একজন আনসার ও ৯ পুলিশ সদস্য), আট জন শিক্ষক, পাঁচ জন বিচারক, তিন জন চিকিৎসক এবং তিন জন সাংবাদিক বলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
‘এর মধ্যে ১৫৭ জন চালক, ১৩৯ জন পথচারী, ৭২ জন নারী, ৩২ জন শিশু, ২৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ২৫ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আট জন শিক্ষক, তিন জন চিকিৎসক, পাঁচ জন পুলিশ এবং একজন আনসার বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে।’
প্রতিবেদন থেকে আরো জানা গেছে, নভেম্বর মাসে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ২৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান, ২৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ বাস, ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক এবং ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
এছাড়া প্রতিবেদনটির পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ০১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। আর সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার দুই দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, এক দশমিক ১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।