প্রাথমিকভাবে এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ১০টি জেলা নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরইমধ্যে এসব জেলার হাসপাতালগুলোতে টেস্ট কিট পাঠানো হয়েছে।
১০টি জেলা হল- গাইবান্ধা, মুন্সিগঞ্জ, পঞ্চগড়, মাদারীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মেহেরপুর, সিলেট, জয়পুরহাট ও পটুয়াখালী।
এদিকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালেও শনিবার থেকে অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এ হাসপাতালটিতে ৫০০টি কিট পৌঁছে গেছে বলেও জানা গেছে।
সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘এর আগে ৫০টি কিট দিয়ে এখানে পরীক্ষামূলক অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়েছিলো। এজন্য তিনজনকে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।’
দেশে বর্তমানে যে পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করা হয় সেটাকে আরটি-পিসিআর টেস্ট বলা হয়। এ পরীক্ষায় নমুনা দেয়ার পর ফল পেতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় লাগে।
কিন্তু অ্যান্টিজেন টেস্টে নমুনা সংগ্রহের ২০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যেই করোনা পজিটিভ নাকি নেগেটিভ সেটা জানা যায়। তবে এ পরীক্ষাতেও কিছু ফলস রিপোর্ট আসার আশঙ্কা থেকে যায়।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘অ্যান্টিজেন টেস্টের পরে কারো মধ্যে করোনা শনাক্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত সাধারণ মানুষের সংস্পর্শ থেকে আলাদা করলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।’
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কার্যক্রম চালাতে এর মধ্যে চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। শনিবার থেকে প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, যেসব জেলায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, প্রাথমিকভাবে সেসব জেলাকে অ্যান্টিজেট টেস্ট শুরুর জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য জেলায় এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। ১০টি জেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা পরে আরো ১০টি জেলায় টেস্ট শুরু করব। এভাবে ধাপে ধাপে সারাদেশে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হবে। যাদের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতদিন ধরে করোনার উপসর্গ (জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, স্বাদ-গন্ধ নেয়ার ক্ষমতা লোপ পাওয়া) আছে, প্রাথমিকভাবে তাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হবে।
গত মার্চে বাংলাদেশে মহামারি করোনার প্রকোপ শুরুর পর অদ্যাবধি শুধু আরটি-পিসিআর টেস্টই চলে আসছিল। তবে পরীক্ষায় গতি আনতে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরুর ওপর জোর দিয়ে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাসেরও বেশি সময় আগে অ্যান্টিজেন নীতিমালা প্রণয়ন করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর করোনার নমুনা পরীক্ষায় সেই অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দেয় সরকার।