করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উদযাপন ঘিরে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
৩১ ডিসেম্বর রাতে সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে কোনো ধরনের জমায়েত বা অনুষ্ঠান করা যাবে না।
সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় এলাকায় এবং রাত ৮টার পর গুলশান ও বনানী এলাকায় বহিরাগত কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিধি-নিষেধের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠান সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ পালিত হবে।
তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
৩১ ডিসেম্বর রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালনাসহ যে কোনো ধরনের অশোভন আচরণ এবং বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঢাকার নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ডিএমপি কর্তৃক যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—
ঢাকার সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ বা উৎসব করা যাবে না। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোনো ধরণের আতশবাজি-পটকা ফোটানো যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় দেওয়া সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। তবে পরিচয় দেওয়া সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করা যাবে।
গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে ওই এলাকার বাসিন্দারা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সব নাগরিক বসবাস করেন না তাদের এসব এলাকায় প্রবেশে নিরুৎসাহিত করা হলো।
রাত ৮ টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার নাগরিকদের ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তনের অনুরোধ করা হলো।
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকার কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। রাত ১০টার পর সব ফাস্টফুডের দোকান বন্ধ থাকবে।
তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করা যাবে। তবে কোনোভাবেই ডিজে পার্টি করতে দেওয়া হবে না।
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হলো। ডিএমপি উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ ছাদেও থার্টিফার্স্টের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
যেসব এলাকায় যান চলাচলে থাকবে বিধিনিষেধ-
৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। সে ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত নাগরিকদের রাত ৮টার মধ্যে এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
রাত ৮ টা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নং রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং উক্ত এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, তবে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।
একইভাবে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরদিন ভোর ৬ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিচয় নিশ্চিত সাপেক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে টিএসসি, রোমানা স্কয়ার, ঢাকা মেডিক্যাল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাঙ্কর্য ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, বকশীবাজার ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোনো যানবাহন প্রবেশ করবে না, শুধু বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।
হাইকোর্ট ক্রসিং থেকে আগত সব যানবাহন দোয়েল চত্বরের বামে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চাঁনখারপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।
কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি।